সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার চলনবিলের মাঝে সবুজের বুকে লুকিয়ে আছে ছোট্ট একটি গ্রাম তরমপুর। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এটি চলনবিলে ভেসে থাকা সবচেয়ে ছোট গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সরল জীবনযাত্রা ও সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ভরপুর এই গ্রাম পর্যটকদের মন কাড়ার মতো সব উপাদান ধারণ করে আছে।
গ্রামের চারপাশজুড়ে বিস্তৃত জলাভূমি ও ধানক্ষেত। বিশেষ করে বর্ষাকালে তরমপুর তার সৌন্দর্যের শীর্ষে পৌঁছায়। তখন চারপাশে থৈ থৈ পানি, ভাসমান সাদা মেঘ আর সবুজ ফসলের সমারোহ মিলে এক অনন্য দৃশ্যের জন্ম দেয়।
তরমপুরের বাসিন্দাদের প্রধান জীবিকা কৃষি, বিশেষত ধান চাষ। পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে মৎস্য শিকার এখানকার অর্থনীতিতে বাড়তি অবদান রাখে। বিলের পানিতে মাছ ধরা শুধু জীবিকার মাধ্যম নয়, বরং এটি গ্রামীণ সংস্কৃতিরও অংশ।
সামাজিক জীবনেও তরমপুর সমৃদ্ধ। গ্রামের মানুষদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অতিথিপরায়ণতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। উৎসব-পার্বণে সবাই একত্রিত হয়, যা সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।
তবে পর্যটন সম্ভাবনা থাকলেও তরমপুরের অবকাঠামো উন্নয়ন এখনো সীমিত। পর্যটকদের সুবিধার্থে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন। পাশাপাশি পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণেও গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক পরিকল্পনা ও সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে তরমপুরকে একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্রে রূপ দেওয়া সম্ভব। এতে স্থানীয় অর্থনীতি যেমন সমৃদ্ধ হবে, তেমনি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের মাধ্যমে এখানকার মানুষের জীবনমানও উন্নত হবে।
তরমপুরের মতো গ্রামীণ অঞ্চলগুলোতে পর্যাপ্ত নজর দিলে তা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রাকৃতিক সম্পদ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের গ্রাম বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধিতেও অবদান রাখতে সক্ষম।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :