ভেনেজুয়েলার প্রধান আয়ের উৎস তেল খাতকে সরাসরি লক্ষ্য করে নতুন ঘোষণা দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভেনেজুয়েলায় প্রবেশকারী ও দেশটি থেকে বের হওয়া সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর `সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক অবরোধ` আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
মঙ্গলবার নিজের ট্রুথ সোশালে এক ঘোষণায় ট্রাম্প বলেন, ভেনেজুয়েলার নেতৃত্বকে যুক্তরাষ্ট্র `বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন` হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, দেশটির সরকার সম্পদ লুট, সন্ত্রাসবাদ, মাদক পাচার ও মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া বার্তায় ট্রাম্প বলেন, এই ঘোষণার ভিত্তিতে ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেল বহনকারী নিষেধাজ্ঞাভুক্ত জাহাজগুলোর ওপর পূর্ণ অবরোধ আরোপ করা হয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্পের এই ঘোষণার প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে পড়ে। এশিয়ার বাজারে লেনদেনে মার্কিন অপরিশোধিত তেলের দাম ১ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। এর আগে তেলের দাম ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল।
এই অবরোধ কীভাবে কার্যকর করা হবে হোয়াইট হাউস এখনো তা জানায়নি। তবে গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি তেলবাহী ট্যাংকার জব্দের ঘটনার পর থেকেই কার্যত রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আটক হওয়ার আশঙ্কায় বেশ কয়েকটি ট্যাংকার ভেনেজুয়েলার জলসীমায়ই অবস্থান করছে।
এর পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসন এ অঞ্চলে হাজার হাজার মার্কিন সেনা ও একাধিক যুদ্ধজাহাজ, এমনকি একটি বিমানবাহী রণতরীও মোতায়েন করেছে।
ভেনেজুয়েলা সরকার ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে `উসকানিমূলক হুমকি` বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার সরকার উৎখাত করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমাণিত তেল মজুত দখলের চেষ্টা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেও এ সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, অবরোধ সাধারণত যুদ্ধের শামিল এবং এর জন্য কঠোর আইনি অনুমোদন প্রয়োজন। টেক্সাসের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান হোয়াকিন কাস্ত্রো এ পদক্ষেপকে `যুদ্ধের ঘোষণা` বলে মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, অবরোধের প্রভাবে ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি ইতোমধ্যেই উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ-তে সাম্প্রতিক সাইবার হামলাও সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও চরম ডানপন্থীরা আমাদের দেশকে শোষণ করতে চায়। ভেনেজুয়েলা তার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এবং শান্তিই শেষ পর্যন্ত জয়ী হবে।
কালের সমাজ/এসআর


আপনার মতামত লিখুন :