গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গ্রহণ শুধু গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমকে টিকিয়ে রাখেনি, বরং মাইক্রোফিন্যান্সকে আরও বিস্তৃত করেছে।
মালয়েশিয়ায় আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে তিন দিনের সরকারি সফরের পর বারনামার প্রধান সম্পাদক আরুল রাজু দুরার রাজ, আন্তর্জাতিক সংবাদ বিভাগের সম্পাদক ভুন মিয়াও পিং এবং ইকোনমিক সার্ভিসের সহকারী সম্পাদক কিশো কুমারি সুচেদারামকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস এ তথ্য জানান।
ড. ইউনূস বলেন, “ডিজিটাল ব্যবস্থায় রূপান্তর মূলত পরিকল্পিত ছিল না। মহামারির সময় আরোপিত বিধিনিষেধের কারণে এটি জরুরি ভিত্তিতে চালু করতে হয়েছিল। তখন গ্রামীণ ব্যাংকের সাপ্তাহিক ঋণ পরিশোধ, আবেদন ও দলীয় সমর্থনের সভাগুলো সরাসরি করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই ঋণগ্রহীতারা ফোন ও ডিজিটাল ট্রান্সফারের মাধ্যমে কিস্তি পরিশোধ শুরু করলেন এবং সাপ্তাহিক বৈঠকগুলো জুম প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হতে লাগলো।”
তিনি আরও বলেন, “এই পরিবর্তন এতটাই কার্যকর হয়েছিল যে, মহামারির সমাপ্তির পরও ঋণগ্রহীতা ও কর্মীরা পুরোপুরি শারীরিক বৈঠকে ফিরে যাননি। এমনকি নরওয়েতে অবস্থানরত একজন গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মী অনলাইনের মাধ্যমে নির্বিঘ্নে ঋণ সংগ্রহের কাজ চালিয়ে গেছেন। সবকিছু ভার্চুয়ালি হলেও খুবই পূর্ণাঙ্গ ও কার্যকরভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”
ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, “ডিজিটালাইজেশন আমাদের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসেছে, প্রকৃতির চাপেই আসতে হয়েছে। এখন বিশ্বের অন্যান্য ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিও এটি গ্রহণ করছে।”
১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক জামানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার মাধ্যমে দরিদ্র, বিশেষ করে নারীদের ক্ষমতায়নের পথ দেখিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৯ মিলিয়নেরও বেশি ঋণগ্রহীতা এই সেবা নিচ্ছেন। মালয়েশিয়া ১৯৮৭ সালে আমানাহ ইখতিয়ার মালয়েশিয়ার (AIM) মাধ্যমে গ্রামীণ মডেল গ্রহণ করে এবং আজও নিম্নআয়ের পরিবারগুলিকে ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে সহায়তা করছে।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :