ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

সিরাজগঞ্জে টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে সবজি - মাছের দাম

কালের সমাজ | জলিলুর রহমান জনি, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জুলাই ১৭, ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম সিরাজগঞ্জে টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে সবজি - মাছের দাম

সিরাজগঞ্জ  শহরের বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে হঠাৎ করেই বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে টমেটো ও কাঁচা মরিচের দাম। কাঁচা মরিচের কেজি পাঁচ গুণ বেড়ে ৪০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় পৌঁছেছে। মাছের দামও কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে সাধারণ ক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে।

 

বৃহস্পতিবার  (১৭ জুলাই) সকালে নগরীর ঐতিহ্যবাহী ছোনগাছা ইউনিয়ন  বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজি ও মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রয়োজনের তুলনায় কম বাজার কিনে ফিরছেন অনেকে। বেশি ক্ষুব্ধ হচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ।

 

সপ্তাহের ব্যবধানে বেশির ভাগ সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ৪০ টাকা, তা এখন ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। টমেটোও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজিতে।

 

এ ছাড়া বরবটি, বেগুন, ধুন্দল, পটোল, চিচিঙা ও ঝিঙার দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী প্রতি কেজি টমেটো ১৪০ টাকা, বেগুন ৫০, বরবটি ৬০, ধুন্দল ৪০, পটোল ৪০, চিচিঙা ৫০, ঝিঙা ৫০, ঢেঁড়স ৪০, করলা ৪০, লতা ৫০, কাঁচা পেপে ৩০ টাকা ও লেবুর হালি ১০ টাকা।

 

মাছের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। আকার ও জাতভেদে প্রায় সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন প্রতি কেজি বাউশ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ৩২০ টাকায়, রুই-কাতলা ২৮০ থেকে ৩৫০, সিলভার কার্প ২১০ থেকে ২৬০, মৃগেল ২৫০ থেকে ২৮০, কই ২৩০ থেকে ৩৪০, শিং ২৫০ থেকে ৫৭০, পাবদা ৩২০ থেকে ৩৮০, শোল ৫৪০ থেকে ৮২০, ট্যাংরা ৪৭০ থেকে ৭৬০, গুলশা ৩৫০ থেকে ৯৫০, টাকি ৩৬০ থেকে ৫৩০, তেলাপিয়া ১৭০ থেকে ২৫০ ও পাঙাশ ১৭০ থেকে ২০০ টাকা।

 

কিছুটা স্বস্তি মিলেছে ব্রয়লার মুরগির দামে। এক সপ্তাহ আগে ১৫০ টাকা কেজি থাকলেও এখন তা ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য পণ্য তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে। যেমন- সোনালি মুরগি ২৯০ টাকা কেজি, ফার্মের ডিম হালি ৪০ টাকা, হাঁসের ডিম হালি ৬০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ টাকা ও গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

 

সবজি কিনতে আসা ক্রেতা জুবায়ের হোসেন  বলেন, ‘বাজারে সবজির ঘাটতি নেই। তবুও দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা। এতে আমরা সমস্যায় পড়ছি।’ মাছ কিনতে আসা মোহাম্মদ নুর আলম  বলেন, ‘দামাদামি করলেও বিক্রেতারা এক টাকাও কমাচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই তাদের  বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। আমি চার কেজি মাছ কিনতে এসেছিলাম, এখন দুই কেজি কিনেই বাড়ি ফিরছি।’

 

সবজি বিক্রেতা মোঃ হযরত আলী  দাবি করেন, ‘কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে অনেক জায়গায় সবজি তুলতে সমস্যা হচ্ছে, সরবরাহ কমেছে। এজন্য দাম বেড়েছে। বিশেষ করে কাঁচা মরিচের সরবরাহ খুবই কম, তাই ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এতে আমাদের কোনো কারসাজি নেই।’ মাছ বিক্রেতা বিমল চন্দ্র দাস  বলেন, ‘সবাই যে দামে বিক্রি করছে, আমিও সেই দামেই বিক্রি করছি। এতে বেশি লাভ হচ্ছে না।’

 

বাজারে নিত্যপণ্যের এ অস্থিরতা নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সিরাজগঞ্জ  জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক  বলেন, ‘দাম বাড়াতে হলে তার যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে। অহেতুক দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের ঠকানো যাবে না। বাজারে অভিযান চালানো হবে। যদি কেউ যৌক্তিক দামে পণ্য না বিক্রি করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

কালের সমাজ//এসং.র.ন

Side banner
Link copied!