ঢাকা বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্রতিবাদে সোচ্চার বিএনপি

কালের সমাজ | হাসানুল কাদির জুলাই ১৬, ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্রতিবাদে সোচ্চার বিএনপি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। একটি মহল তাঁর বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিশেষ গোষ্ঠীর মিছিলে অশ্লীল ও অকথ্য ভাষায় স্লোগান দেওয়ার পর  এই ষড়যন্ত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় বিএনপির শীর্ষ মহল থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।

 

সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে নয়া পল্টনে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচার ও অপপ্রচার এবং মিটফোর্ডে পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ-মিছিলের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। ওই বিক্ষোভ-মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘লন্ডন বৈঠকে তারেক রহমানকে প্রধান উপদেষ্টা যখন নিশ্চিন্ত করে বলেছেন, এবার নির্বাচন হবে। তখন থেকে একটি গোষ্ঠীর মাথা বিগড়ে গেছে। যারা তারেক রহমান ও বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলে তাঁরা গণতন্ত্রের শত্রু, দেশের শত্রু।’

 


কারও নাম উল্লেখ না করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজ অকথ্য ভাষায় তারেক রহমানকে নিয়ে তাঁরা কথা বলছে, স্লোগান দিচ্ছে। তাঁরা ভেবেছিল, কথাগুলো বললে এবং স্লোগান দিলে বিএনপি মনে হয় ঘরের মধ্যে ঢুকে যাবে। বিএনপি সেই দল, যারা বারবার সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

 

একটি পক্ষ বিএনপিকে উত্তেজিত করে তাঁদের পাতা ফাঁদে পা দেওয়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে উল্লেখ করে নেতা–কর্মীদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টদের বিদায় করতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করেছে বিএনপি। আর যেন ফ্যাসিস্ট না আসতে পারে, সে প্রতিরোধ গড়বে তাঁদের দল।

 

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে কুড়িগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জুলাই-আগস্ট ২০২৪ ছাত্রজনতার আন্দোলনে কুড়িগ্রাম জেলার ১০ শহীদ পরিবারে আর্থিক অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, তারেক রহমানকে নিয়ে অপপ্রচারে নামবেন না। তাহলে আপনাদের উপর অনেক কিছুই এসে পরে যাবে। তারেক রহমান গণতন্ত্রের ধ্রুবতারা। এই গণতন্ত্রের ধ্রুবতারাকে দেখে জুলাই আগস্টের আন্দোলন বেগবান হয়েছে। সুতরাং তাঁকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করা উচিত হবে না।

 

গত দেড় যুগ ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন তারেক রহমান। এরপরও তিনি পরিপক্ব রাজনীতিক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তাঁর রাজনৈতিক বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আত্মবিশ্বাস নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করছে। খুব শিগগির তিনি দেশে ফিরবেন। তাঁকে বরণ করার জন্য বিএনপির লাখো-কোটি নেতা-কর্মী প্রস্তুত। এমন প্রেক্ষাপটে তিনি যখন দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিক তখনই তাঁর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণের যে প্রক্রিয়া চলছে, তা থামাতে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা মিটফোর্ডেও সোহাগ হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

 

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, তারেক রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে একটি মহল নানাভাবে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। রাজনৈতিকভাবে ভোটের মাধ্যমে তাকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ার ভয়ে অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলো তার বিরুদ্ধে সক্রিয়। তারেক রহমানের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে সেই অপশক্তিগুলো। দেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণের প্রক্রিয়া থামাতেই এই ষড়যন্ত্র।

 

নেতারা মনে করেন, দেশে যখনই স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখনই চক্রান্তকারীরা তারেক রহমানের জনপ্রিয়তাকে লক্ষ্যবস্তু করে তোলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তারা সক্রিয়। ছদ্মবেশে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ ও তাদের অনুগত দেশি-বিদেশি অপশক্তি। চলমান পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে অগণতান্ত্রিক অপশক্তিকে সতর্কতার সঙ্গে মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন চাইলে সব ধরনের সহযোগিতাও করবে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুত দেশকে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ফেরাতে চায়। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও মব সৃষ্টির অপচেষ্টার প্রতিবাদসহ নানা দাবিতে মাঠে নেমেছে বিএনপির কয়েকটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন-যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

 

বিএনপি নেতারা বলেন, ‘মব সন্ত্রাস’ করে যারা অরাজকতা সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় সামাজিক শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছে। সার্বিকভাবে সাধারণ মানুষের জন্য একটা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অকার্যকর মনে হচ্ছে। এটি কোনো অপশক্তিকে ষড়যন্ত্রের সুযোগ করে দেওয়ার অংশ কি না-সে ব্যাপারেও প্রশ্ন উঠছে জনমনে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশ ও জণগণের স্বার্থে বড় দল হিসেবে বিএনপি এই পরিস্থিতির উন্নতি চায়, সুরাহা চায়।

 

বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক বলেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ স্লোগানে দেশ পুনর্গঠনে তারেক রহমানের স্বপ্নই তার এবং তার দলের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অন্যতম প্রধান কারণ। হীনমন্যতা ও ঈর্ষা থেকে কিছু দল ও গোষ্ঠী তারেক রহমানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। যা অপরাজনীতি ছাড়া কিছু নয়।

 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদাী প্রচারদলের ঢাকা মহানগর সভাপতি আজমিন জাফর ইকবাল তালুকদার কালের সমাজকে বলেন, বিএনপি মানেই জিয়া পরিবার। জিয়া পরিবার বিশ্বের একটি ইতিহাস। এই ইতিহাসকে নিয়ে যারা কুমন্তব্য করেছে, তাদের কী পরিচয়? তারা কোত্থেকে এলো? জাতি তাদের পরিচয় জানতে চায়। আমরা তাদের বিরুদ্ধে সজাগ ও সোচ্চার আছি। কোনো অবস্থায়ই জিয়া পরিবার ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত বরদাশত করা হবে না।

---হাসানুল কাদির

 

কালের সমাজ//এসং.র.ন

Side banner
Link copied!