যমুনাপাড়ের জনপদ সিরাজগঞ্জে জাতীয় নির্বাচনের উত্তাপ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে জেলার ছয়টি আসনে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। প্রতিটি আসনেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নামতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে সক্রিয় রয়েছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই প্রতিটি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচারণা শুরু করেছে। পাশাপাশি নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের নামও নির্বাচনী মাঠে শোনা যাচ্ছে। তবে বামপন্থি রাজনৈতিক সংগঠনগুলো এখনো তেমন তৎপরতা দেখাতে পারেনি।
সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর ও সদরের একাংশ) এই আসনে ভোটার সংখ্যা ৩,৯৪,৬৭২ জন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী- জেলা আমির মাওলানা শাহীনুর আলম মাঠে নেমেছেন। ইসলামী আন্দোলন- কাজিপুর উপজেলা সভাপতি হাফেজ জাফর আহমদ প্রার্থী। বিএনপি-কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা, জেলা সহসভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা এবং সাবেক সভাপতি সেলিম রেজা সক্রিয় রয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ-২ (সদরের একাংশ ও কামারখন্দ) ভোটার সংখ্যা ৪,০৪,৫০৭ জন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী- জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম। ইসলামি আন্দোলন- কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মুফতি মুহিব্বুল্লাহ।
বিএনপি-স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু শক্তিশালী প্রার্থী। তার পাশাপাশি রয়েছেন হুমায়ুন ইসলাম খান, মোকাদ্দেস আলী, নাজমুল হাসান ও মির্জা মোস্তফা জামানসহ কয়েকজন।
সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ ও তাড়াশ) ভোটার সংখ্যা ৪,১৪,৮৪৩ জন।
বিএনপি-এখানে ১৬ জন সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। তৎপরদের মধ্যে ভিপি আয়নুল হক, খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর, রাকিবুল করিম খান পাপ্পু, রাহিদ মান্নান লেনিন, ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন, রুহী আফজাল ও ব্যারিস্টার আব্দুল বাতেন উল্লেখযোগ্য। এছাড়া প্রবাসী কয়েকজনও প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য প্রফেসর ড. মাওলানা আব্দুস সামাদ। ইসলামী আন্দোলন-বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আয়নুল হক।
সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া ও সলঙ্গার একাংশ) ভোটার সংখ্যা ৪,৪৩,৪৪১ জন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী- কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। বিএনপি-এম আকবর আলী, অ্যাডভোকেট সিমকী ইমাম, অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি খান সাঈদ হাসান জ্যোতি, শরফুদ্দিন মঞ্জু, আব্দুল ওয়াহাব ও নিয়ামুল হাকিম সাজু। এনসিপি- সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী (প্রীতি) আলোচনায় রয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি ও চৌহালী) ভোটার সংখ্যা ৩,৯৮,৬৬১ জন।বিএনপি-আমিরুল ইসলাম খান আলীম ও গোলাম মওলা খান (বাবলু)। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য অধ্যক্ষ আলী আলম।ইসলামী আন্দোলন- রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি নুরুন নবী। গণঅধিকার পরিষদ- শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি সোহরাওয়ার্দী হোসেন প্রার্থী হলেও তেমন তৎপরতা নেই।
সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) ভোটার সংখ্যা ৪,৫৬,৩৭৯ জন। বিএনপি-ডা. এম এ মুহিত, গোলাম সরোয়ার, মোস্তাফিজুর রহমান মনির, ডা. আব্দুল লতিফ ও তরিকুল ইসলাম আরিফ সক্রিয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী- উপজেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা মিজানুর রহমান।ইসলামী আন্দোলন-জেলা উপদেষ্টা আলহাজ মেসবাহ উদ্দিন।এনসিপি- কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব এস এম সাঈফ মোস্তাফিজও প্রার্থী হবেন বলে আলোচনা রয়েছে।
ছয়টি আসনে বিএনপি একাধিক প্রার্থী নিয়ে মাঠে থাকলেও জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন শুরু থেকেই একক প্রার্থীকে ঘিরে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থীদের উপস্থিতি নির্বাচনী মাঠে বৈচিত্র্য আনলেও বাম দলগুলো এখনো দৃশ্যমান নয়। ফলে সিরাজগঞ্জে বিএনপি বনাম জামায়াত-ইসলামী আন্দোলনের লড়াইয়ের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের দলগুলো কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, তা নির্বাচনের কাছাকাছি গিয়ে স্পষ্ট হবে।
কালের সমাজ/ জ.জ./ সাএ
আপনার মতামত লিখুন :