দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স (২৬৪ কোটি ডলার) আসে, এরপর ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (২৫৩ কোটি ডলার) রেমিট্যান্স এসেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চলতি মার্চ মাসে রেমিট্যান্সের নতুন রেকর্ড হতে পারে, যা আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মার্চের প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসীরা ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২০ হাজার ২০৪ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১১ কোটি ডলারের বেশি আসছে।
এই ধারা অব্যাহত থাকলে মার্চ মাসে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে, যা দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থপাচার কমেছে এবং হুন্ডি ব্যবসার দৌরাত্ম্যও হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংকে এখন খোলা বাজারের সমান ডলারের দাম পাওয়া যাচ্ছে, ফলে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
মার্চের প্রথম ১৫ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৭ কোটি ১১ লাখ ডলার, বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১৫ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার ডলার, এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩১ লাখ ডলার।
তবে ৭টি ব্যাংকে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (BDBL), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৪৯৪ কোটি ডলার। ফলে ৩৫৫ কোটি ডলার বেশি এসেছে।
এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ ২.৬৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২.৫৯ বিলিয়ন ডলার এসেছিল, যা ছিল আগের রেকর্ড। এবার সেই রেকর্ড ভেঙেছে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে।
অর্থবছরের আগস্ট থেকে টানা ৭ মাস দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।জুলাই: ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ডলার,আগস্ট: ২২২ কোটি ১৩ লাখ ডলার,সেপ্টেম্বর: ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার,অক্টোবর: ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার,নভেম্বর: ২২০ কোটি ডলার,ডিসেম্বর: ২৬৪ কোটি ডলার (সর্বোচ্চ),জানুয়ারি: ২১৯ কোটি ডলার,ফেব্রুয়ারি: ২৫৩ কোটি ডলার,মার্চে নতুন রেকর্ডের সম্ভাবনা,চলতি মার্চে প্রথম ১৫ দিনেই ১৬৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা দেশের রেমিট্যান্স ইতিহাসে নতুন রেকর্ড হবে।
একুশে সংবাদ//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :