দক্ষিণের সিনেমায় তারকার সংখ্যা এখন বেড়েছে। তাদের নিয়ে উন্মাদনাও কম নেই দর্শকদের। তবে এখনও ‘থালাইভা’ একজনই। তিনি ভারতীয় সিনেমার মেগাতারকা রজনীকান্ত। দক্ষিণ ভারতে তিনি কেবল সিনেমার তারকা নন, রীতিমতো পূজিত হন। তার ছবি মুক্তি পাওয়া মানে বক্সঅফিস নিয়ে নিশ্চিন্ত প্রযোজক। যদিও বয়স বেড়েছে বলে ছবির সংখ্যা কমিয়েছেন তিনি।
আজ ১২ ডিসেম্বর এ মেগাতারকা ৭৫তম জন্মদিন। রজনীকান্তের জন্ম ১৯৫০ সালে, বেঙ্গালুরুর এক মরাঠি পরিবারে। মা সংসারের কাজকর্ম নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। আর বাবা রামোজি রাও গাইকোয়াড ছিলেন পুলিশের কনস্টেবল।
রজনীকান্তের উত্থান যেন দেশের ‘আম আদমির’ গল্প বলে। কোনও তথাকথিত পারিবারিক আভিজাত্য ছিল না তাঁর। সাধারণ বাস কনডাক্টর থেকে একেবার ভারতীয় সিনেমার উজ্জ্বলতম তারকার হওয়ার সফর কিছু কম রোমাঞ্চকর নয়।

রজনীকান্তের যখন ছয় বছর বয়স, তখন তার বাবা চাকরি থেকে অবসর নেন। ছয় জনের সংসারে পেনশনের টাকা দিয়ে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে বাবা রামোজির। সংসারের হাল ধরতে ছোট থেকেই কাজে নামেন রজনীকান্ত। কখনও কুলিগিরি, কখনও কাঠের মিস্ত্রি হয়ে কাজ করেছেন। তারপর বেঙ্গালুরু ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টের বাস কনডাক্টরের কাজ পান। যদিও স্কুলে পড়ার সময় থেকেই অভিনয়ের প্রতি ভালবাসা ছিল। তাই চাকরির ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন সিনেমায় ছোটখাটো পৌরাণিক চরিত্রে অভিনয় করতেন রজনীকান্ত।
তবে পুরোপুরি অভিনয়ে আসার আগে বাস কন্ডাক্টর হিসাবে ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। যে রুটের বাসের কন্ডাক্টর ছিলেন রজনীকান্ত, সে বাসটা ধরার জন্যই অনেক সময় যাত্রীরা অপেক্ষা করতেন। কারণ, রজনীকান্ত বাসের মধ্যেও টিকিট সংগ্রহের সময় নিজের অনন্য স্টাইল দেখিয়ে যাত্রীদের বিনোদনের জোগান দিতেন। পরবর্তীকালে সেই সব কেরামতি তিনি পর্দাতেও দেখিয়েছেন। একেবারে টানাটানির সংসার থেকে উঠে এসে একের পর এক ছবি করে, বর্তমানে প্রায় ৪৩০ কোটি রুপির সম্পত্তির মালিক তিনি।

ভাল করে অভিনয় শেখার জন্য মাদ্রাজ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। ফিল্ম ইনস্টিটিউটেই তামিল ফিল্ম পরিচালক কে বালাচন্দ্রের নজরে পড়ে যান তিনি। তার পরামর্শেই তামিল ভাষা শেখেন রজনীকান্ত। ১৯৭৫ সালে কে বালাচন্দ্রের ফিল্ম ‘অপূর্বা রাগাঙ্গাল’-এ প্রথম অভিনয়। তার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি ভারতের প্রথম ও এশিয়ার দ্বিতীয় অভিনেতা যিনি একটি ছবির জন্য ২৬ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেন। বর্তমানে সেই অঙ্কটা আরও বেড়েছে।
কালের সমাজ/এসএমআর


আপনার মতামত লিখুন :