ঢাকা শনিবার, ০৩ মে, ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

বিশ্ব শান্তি কামনায় সরিষাবাড়ীতে চরক পূজা অনুষ্ঠিত

কবীর আহমেদ, সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ০২:০৫ পিএম বিশ্ব শান্তি কামনায় সরিষাবাড়ীতে চরক পূজা অনুষ্ঠিত

ঋতুরাজ বসন্তের বিদায়ের দিন অর্থাৎ বাংলা বছরের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অনুষ্ঠিত হলো ১১ দিনব্যাপী চরক উৎসব ও শিব পূজা। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে দেবাদিদেব শ্রী শ্রী মহাদেব মন্দির প্রাঙ্গণে পূজার্চনা ও প্রার্থনার মাধ্যমে উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। উৎসবের আয়োজক ছিলেন সোনাকান্দর গ্রামের ভক্তবৃন্দ এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ‘শিব যুব সংঘ’।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে চৈত্র সংক্রান্তি এক বিশেষ দিন। বছরের শেষ দিনে দেশজ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে চরক পূজার আয়োজন করা হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের সোনাকান্দর সার্বজনীন কালী ও দুর্গা মাতা মন্দির এলাকায় এই আয়োজন হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ চাঁদ মিয়া, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জামালপুর জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক রমেশ সূত্রধরসহ স্থানীয় পূজামণ্ডপ কমিটির সভাপতি দেবেন চন্দ্র বর্মন, সহসভাপতি প্রতাপ চন্দ্র বর্মন, সাধারণ সম্পাদক পিন্টু চন্দ্র বর্মন এবং অন্যান্য সদস্যরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন পেশাজীবী, সাংবাদিক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

চরক পূজা মূলত শিব ঠাকুরের পূজা, যাকে শিবের ‘গাজন’ বলেও অভিহিত করা হয়। পূজায় অংশগ্রহণকারী ভক্তরা চৈত্র মাসজুড়ে ঘর ছেড়ে শিব মন্দিরে অবস্থান করেন। তারা লাল পোশাক পরে সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন করেন এবং বাড়ি বাড়ি ঘুরে গাজনের গান করেন। মানুষ তাদের চাল, সবজি কিংবা অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেন। এ সহায়তা দিয়েই চরক পূজার আয়োজন করা হয়।

পূজার সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো ‘চরক গাছে ঘোরা’। এতে ভক্তরা পিঠে লোহার হুড়কা (বরশি) গেঁথে গাছে ঝুলে থাকেন এবং পরে সেই চাকার সঙ্গে বেঁধে দ্রুতগতিতে ঘোরানো হয়। এবছর গোপাল রায় ও তার ছেলে সাগর রায় এই বিশেষ অংশে অংশ নেন। তাদের পিঠে লোহার হুড়কা লাগান ধীরেণ সন্ন্যাসী। এই দৃশ্য দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় করেন।

তবে স্থানীয়রা বলছেন, এক সময় যেখানে অনেক এলাকায় চরক পূজা হতো, এখন তা অনেকটাই কমে এসেছে। তারপরও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার জন্য এই আয়োজন প্রশংসনীয়।

 

কালের সমাজ// এ.জে

Side banner