ফরিদপুরের মধুখালীতে কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ করে কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় মরিচ চাষিরা। এক সপ্তাহ আগেও যেখানে প্রতি মণ মরিচ ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, সেখানে গতকাল (১৫ জুলাই) তা নেমে এসেছে ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায়। আজ ১৬ জুলাই বুধবার মধুখালী আরতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৩০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকায়। এতে চাষিদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
চাষিদের অভিযোগ, ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হওয়ায় দেশীয় মরিচের বাজারে ধস নেমেছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে নিচু জমির অনেক মরিচ গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাজারে কিছুটা সরবরাহ সংকট দেখা দিলেও আমদানির কারণে দাম বাড়েনি, বরং আরও কমেছে।
মধুখালী উপজেলার বামুন্দী বালিয়াকান্দি গ্রামের চাষি শামসুল ইসলাম জানান, তিনি প্রতি বছর ৫ থেকে ৬ পাকি (বিঘা) জমিতে মরিচ চাষ করেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে অতিবৃষ্টিতে তার সাড়ে ৪ পাকি জমির মরিচ গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।
একই উপজেলার চরারকান্দী এলাকার চাষি আলমগীর বলেন, “বৃষ্টির কারণে মরিচে পচন ধরেছে। এখন আবার দামও কমে গেছে। দাম ৬ হাজার টাকার উপরে না থাকলে আমাদের লোকসানই গুনতে হবে।”
কাদিরদী গ্রামের চাষি ইকবাল হোসেন জানান, “পরশুদিন ৮ হাজার টাকা মণ দামে মরিচ বিক্রি হয়েছে। আজকে একই মরিচ ৪ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমনিতেই লোকসানে আছি, এখন দাম কমলে আর চলা সম্ভব না।”
মধুখালী মরিচ আরতের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান জানান, একদিন আগেও মরিচের দাম ছিল ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। হঠাৎ করে দাম কমে যাওয়ায় চাষিদের কিছুটা ক্ষতি হবে। তিনি বলেন, “৬ হাজার টাকা না থাকলে মরিচ চাষে লাভ হবার সুযোগ কম।”
এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুব এলাহী জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৭২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে অতিবৃষ্টিতে ৭ হেক্টর জমির মরিচ নষ্ট হয়ে গেছে এবং প্রায় ১৫০ হেক্টর জমির গাছ আক্রান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, “চাষিরা শুরুতে ভালো দাম পায়নি। বৃষ্টির কারণে যখন দাম কিছুটা বাড়ছিল, তখন আবার ভারত থেকে মরিচ আসায় দাম কমেছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে চাষিদের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করছি।”
চাষিরা বলছেন, সরকার যদি ভারত থেকে মরিচ আমদানি কমায় এবং বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখে, তবে তারা কিছুটা স্বস্তি পাবে। নইলে মরিচ চাষে লোকসানই তাদের নিয়তি হয়ে দাঁড়াবে।
কালের সমাজ//এসং.র.ন
আপনার মতামত লিখুন :