ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ, চিকিৎসকরা বলছেন সতর্ক হতে

কালের সমাজ | চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি আগস্ট ২, ২০২৫, ১২:১১ পিএম চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ, চিকিৎসকরা বলছেন সতর্ক হতে

চট্টগ্রামে ভাইরাসজনিত জ্বর, বিশেষ করে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮৯ জন। মারা গেছেন ৯ জন। সর্বশেষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত রোববার (২৭ জুলাই) চট্টগ্রামের এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যান হাটহাজারীর বাসিন্দা শিবুচরণ ভৌমিক (৭৪)।

এছাড়া, চিকুনগুনিয়ায় এ বছর এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

চিকিৎসকদের মতে, আক্রান্তদের মধ্যে চার ধরনের ভাইরাসজনিত জ্বর দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বেশি। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে উচ্চ জ্বর, অস্থিসন্ধিতে তীব্র ব্যথা ও অনেক সময় জয়েন্ট ফুলে যাওয়ার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এমনকি জ্বর সেরে যাওয়ার পরও কয়েক সপ্তাহ বা মাসব্যাপী জয়েন্টের ব্যথা থেকে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডা. এ এস এম লুৎফুল কবির শিমুল বলেন, “চিকুনগুনিয়া খুবই যন্ত্রণাদায়ক। এবার জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে ডেঙ্গুর পাশাপাশি চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ অনেক বেশি।”

তিনি আরও বলেন, “চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার এবং জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।”

চিকিৎসকদের অভিযোগ, চট্টগ্রামে সরকারি পর্যায়ে এখনো আরটিপিসিআর ল্যাব নেই, যার ফলে অনেক রোগী পরীক্ষার আওতায় আসছেন না। বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার খরচ বেশি হওয়ায় অনেকে টেস্ট না করেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

বেসরকারি হাসপাতালগুলোর তথ্যেও মিলেছে চিকুনগুনিয়ার উদ্বেগজনক চিত্র।

এপিক হেলথকেয়ার সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন সপ্তাহে ৫৭৬ জনের রক্ত পরীক্ষা করে ৪৩২ জনের শরীরে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে।

পার্কভিউ হাসপাতালে গত দুই সপ্তাহে জ্বরে আক্রান্ত ৫১২ জনের মধ্যে ৩৪২ জনের দেহে চিকুনগুনিয়া ধরা পড়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত এক সপ্তাহে ৭৫ জনের রক্ত পরীক্ষায় ৪৬ জনের শরীরে একই ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, “চট্টগ্রাম শহরে মশার ঘনত্ব তুলনামূলক বেশি। এ কারণে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপও বেশি। মশা নিধনের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। আমরা তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। উপজেলা পর্যায়েও জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

কালের সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!