ভরা মৌসুমেও খুলনার বাজারে ইলিশের সরবরাহ আশানুরূপ নয়। চাহিদার তুলনায় প্রায় ৯০ শতাংশ কম মাছ বাজারে আসায় দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। ফলে ইলিশ কিনতে এসে অনেকেই খালি হাতে ফিরছেন, আবার কেউবা সাধ্যের মধ্যে পড়ে মাত্র একটি বা দুটি মাছ কিনেই ঘরে ফিরছেন।
খুলনার রূপসা মৎস্য আড়ত ও ৫ নম্বর ঘাট পাইকারী মৎস্য আড়তে দেখা গেছে, ভোর থেকেই ইলিশ কেনার জন্য ভিড় জমেছে পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের। এই আড়তে প্রতি কেজি জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায়, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১,৭০০ টাকায়, ৭০০-৮০০ গ্রাম ইলিশ ১,৮০০ টাকা এবং এক কেজির ওপরে ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২,৩০০ থেকে ২,৫০০ টাকায়।
অন্যদিকে, নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার ও রূপসা কেসিসি মার্কেটে একই ধরনের দাম দেখা গেছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১,০০০ টাকায়, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১,৪০০ থেকে ১,৮০০ টাকায় এবং ৭০০-৮০০ গ্রাম ইলিশ ১,৮০০ থেকে ২,০০০ টাকায়। এক কেজির ওপরে ইলিশের দাম ২,২০০ থেকে ২,৩০০ টাকা।
ওই বাজারে খুচরা ইলিশ বিক্রেতা আশেক ইলাহী জানান, সামনে সরবরাহ বাড়লে প্রতি কেজিতে ৩০০-৪০০ টাকা দাম কমতে পারে। একই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রূপসা মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিসের মালিক আবু মুসা, যিনি জানান, আগের তুলনায় কিছুটা সরবরাহ বেড়েছে এবং দামও কিছুটা কমেছে, তবে এখনো তা অধিকাংশ ক্রেতার নাগালের বাইরে।
পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা জানাচ্ছেন, ইলিশ এখন সরাসরি বরিশাল, ভোলা, কুয়াকাটা, চর দোয়ানি ও আলীপুর থেকে ট্রাকে করে খুলনায় আনা হচ্ছে। সরবরাহের ব্যয় বাড়ায় ইলিশের মূল্যও বেড়েছে।
৫ নম্বর ঘাট পাইকারী মৎস্য আড়তের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সেখ সাইদুল ইসলাম বলেন, “চাহিদার তুলনায় মাছের সরবরাহ প্রায় ৯০% কম। মাছ গাড়িতে করে আনা হচ্ছে, এজন্য দামও বেশি।”
খুলনা রূপসা পাইকারি মৎস্য বাজারের সাধারণ সম্পাদক মো. হায়দার আলী জানান, মাছের চাহিদা বেশি। কিন্তু সেভাবে মাচ আসছে না। ফলে দাম বেশি।
অন্যদিকে, বাজারে আসা ক্রেতারা দাম দেখে হতাশ। ময়লাপোতা বাজারে আসা ক্রেতা স্বপ্ন কুমার বলেন, “চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটা করতে পারিনি। দাম অনেক বেশি।”
নগরীর রূপসা খুচরা বাজারের বিক্রেতা মো. মাসুদ বলেন, “চাহিদা বেশি কিন্তু সরবরাহ কম। আমরা বেশি দামে কিনে আনতে হয়, তাই বিক্রিও বেশি দামে করতে হয়।”
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, যদি বরিশাল ও ভোলার দিক থেকে মাছের সরবরাহ নিয়মিত থাকে, তাহলে আগামী সপ্তাহগুলোতে ইলিশের দাম কিছুটা কমে আসবে এবং সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে আসবে দেশের জাতীয় এই মাছ।
কার সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :