গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের এক অসহায় মা হাসিনা বেগম তার নিখোঁজ পুত্র রেজওয়ান ইসলাম (১৯)–কে ফিরে পেতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। পাশাপাশি মানবপাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
গত ১৬ জুলাই (বুধবার) সকাল ১১টায় জলিরপাড় বাজারস্থ নিজ বাড়িতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে হাসিনা বেগমের ছোট বোন লাবনী আক্তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, জলিরপাড়ের বাসিন্দা মৃত আবুল কাসেম শেখের স্ত্রী হাসিনা বেগমের দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে রেজওয়ান ইসলাম মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার একটি মাদ্রাসায় মাওলানা বিভাগে পড়াশোনা করছিল।
নিকট আত্মীয় পরিচয়ে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য জুয়েল শেখ, কালা শেখ, বর্ষা, শিউলী আক্তার শারমিন, সুইটি বেগম, সাবানা ও ভাষানী নামের সাতজন রেজওয়ানকে ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ৮ লাখ টাকা এবং পরে আরও ২ লাখ টাকা নেয়।
পরবর্তীতে ছেলেকে লিবিয়ায় পাচার করে তারা আরও ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সর্বমোট ২৬ লাখ টাকা নেয়ার পরও তারা রেজওয়ানকে ইতালি না পাঠিয়ে লিবিয়ায় একটি ঘরে আটকে রাখে এবং ফের ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
রেজওয়ান ইসলাম বর্তমানে লিবিয়ায় আটকে আছে এবং কয়েক মাস ধরে তার সঙ্গে পরিবারের কোনো যোগাযোগ নেই।
হাসিনা বেগম মুকসুদপুর থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নম্বর: জিআর-১৭৯/২৫)। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-৮ এর একটি দল গত ২৯ জুন ভোরে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি জুয়েল শেখ ও তার সহযোগী কালা শেখকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তারা গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
পুলিশের তদন্তেও উঠে এসেছে, আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা উন্নত জীবনের প্রলোভনে বিভিন্ন দেশ পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে সেখানকার মাফিয়া চক্রের মাধ্যমে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে হাসিনা বেগম মানবপাচারকারী চক্রের কঠোর শাস্তি এবং তার ছেলেকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
কার সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :