এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সেতুটির পাটাতন ভেঙে আছে। ভাঙা সেতুর খাদে পড়ে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এখনো ঝুঁকি নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে হাজারো মানুষ ও ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করছে। তবে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার জোড়াদহ ও ফলসী ইউনিয়নের বেলতলা-শড়াতালা গ্রামের মাঝামাঝি জিকে প্রধান সেচ খালের ওপর সেতুটির অবস্থান।
জানা যায়, বেলতলা-শড়াতালা প্রধান সড়কের মাঝামাঝি জিকে সেচ প্রকল্পের আলমডাঙ্গা মেইন খালের ওপর নির্মিত এ সেতুটি দীর্ঘদিন ভেঙে পড়ে আছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ সেতুটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর ওপর দিয়ে অসংখ্য পথচারী পার হচ্ছেন। ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করছে। কৃষকেরা বিভিন্ন ফসল যানবাহনে করে বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। সেতুর ভাঙা স্থানে যানবাহন ধরে পার করতে হচ্ছে।মোটরসাইকেলের চালকেরা সাবধানে সেতু পার হচ্ছেন।
সাতব্রীজ বাজারের পাশ দিয়ে জিকে সেচ প্রকল্পের একটি খাল চলে গেছে। এটি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে বেরিয়ে শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ হয়ে মাগুরার মধ্যে চলে গেছে। এটি প্রকল্পের প্রধান সেচ খাল হিসেবে বহমান।
সেতুর পাশে বসে কথা হয় শড়াতালা গ্রামের খাতের মন্ডলের সঙ্গে। তিনি বলেন, জোড়াদহ বাজার থেকে একটি সড়ক শড়াতালা মধ্যে দিয়ে চলে গেছে। খালের অপরপ্রাপ্তে ফলসী ইউনিয়ন। যেখানকার মানুষও এই সড়কে চলাচল করে। তিনটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ১৫ গ্রামের মানুষ সড়কটি ব্যবহার করে। এর মধ্যে জোড়াদহ, হরিশপুর, পাখিমারা, শড়াতালা, কুলবাড়িয়া, রঘুনাথপুর, কালাপাহাড়িয়া,মান্দিয়া উল্লেখযোগ্য। এই সড়কের বেলতলা ও শড়াতালা এলাকায় কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিক্ষার্থীরা এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করেন।
বেলতলা গ্রামের রিজন মন্ডল বলেন, ষাট দশকে পানি উন্নয়ন বোর্ড খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করে। ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহন চলাচল করত। ২০১০ সালের দিকে সেতুটির পাটাতন ভেঙে যায়। ১০ ফুট পাটাতনের প্রায় সবটুকু ভেঙে পড়ে। স্থানীয়ভাবে বাঁশ-চাটাই দিয়ে ভেঙে পড়া সেতুর কিছু অংশে পাটাতন তৈরি করে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। সেটাও মাঝেমধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। তখন আবার মেরামত করা হয়।
শুধু পাটাতন নয়, সেতুটির রেলিংও সিংহভাগ ভেঙে গেছে। যে কারণে ভাঙা পাটাতনের ওপর চলাচল করতে গিয়ে একটু অসাবধান হলেই সেতুর নিচে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেতুর পাশের দোকানি শাহীন আলম বলেন, মাঝেমধ্যেই এখানে দুর্ঘটনা ঘটে। কেউ পড়ে গেলেই তিনি ছুটে গিয়ে উদ্ধার করেন। সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিতে খরচ বাড়ছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এটা আমার নিজ গ্রামের ব্রীজ। অসংখ্যবার পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসে ধরনা দিয়েছি। তারা আশ্বাস দিলেও কিন্তু কোনো প্রতিকার হয়নি। তিনি আরও বলেন উপজেলা শহরের সাথে সংযোগের একটিমাত্র পথ এ সেতুটি। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না করার ফলে সেতুটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দ্রুত একটি নতুন সেতু স্থাপনের দাবিও জানান তিনি।
স্থানীয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যলায়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেছেন, আপাতত তাঁদের হাতে এধরণের কোনো প্রকল্প বরাদ্দ নেই। আর এমন জিকে সেচ খালের উপর নির্মিত সেতুগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড পুনর্নিমাণ করে থাকে
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই সেতু ছাড়াও তাঁদের আরও কয়েকটি সেতু মেরামত করা প্রয়োজন। তাদের রিহ্যাবিলিটেশনের একটি প্রোজেক্টে সবগুলো ব্রীজের তালিকা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে পাশ হওয়ার পর সবগুলো ভাঙা ব্রীজের কাজ শুরু করা হবে।
কালের সমাজ/ হা.প./সাএ

                                                
            
         
                    
                    
                    
                    
                    
                    
                    
                    
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
          
আপনার মতামত লিখুন :