সুদহার অপরিবর্তিত রেখে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুর ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন মুদ্রানীতি প্রকাশ করেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এ সময় ডেপুটি গভর্নর ও নির্বাহী পরিচালকগণ উপস্থিত ছিলেন।
নতুন মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি কিছুটা হ্রাস পেলেও তা এখনও নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। টাকার অবমূল্যায়ন, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা মূল্যস্ফীতির ওপর পুনরায় চাপ সৃষ্টি করছে। এই প্রেক্ষাপটে নীতি সুদের হার কমানোর কোনো ঝুঁকি নিতে নারাজ কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি যদি ধারাবাহিকভাবে কমে এবং প্রকৃত সুদের হার ৩ শতাংশে পৌঁছায়, তখন ধাপে ধাপে নীতিহার কমানো হতে পারে। এর আগে কোনো শিথিলতা আসবে না। আপাতত নীতিহার অপরিবর্তিত থাকবে।
নীতিহার বর্তমানের মতোই বহাল রাখা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর জন্য স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) হার ১১.৫ শতাংশ এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) হার ৮ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, খেলাপি ঋণ ও দুর্বল শাসনব্যবস্থার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংক খাত চাপে রয়েছে। এ সংকট কাটাতে দুর্বল ব্যাংকের জন্য পৃথক ব্যবস্থা, সম্পদের গুণগত পর্যালোচনা এবং ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ‘ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি (রিস্ক বেসড সুপারভিশন)’ চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে নমনীয়তা বজায় থাকবে। বর্তমানে দিনে দুইবার রেফারেন্স রেট ঘোষণা করা হচ্ছে, যা বাজারে স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। তবে অতিরিক্ত অস্থিরতা দেখা দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনে বাজারে হস্তক্ষেপ করবে।
সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৫.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং ৬.৫ শতাংশের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ধরে রাখার লক্ষ্য ঠিক করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এই লক্ষ্য অর্জনে তারা নীতিগত সহনশীলতা বজায় রাখলেও কঠোরতা থাকবে।
মুদ্রানীতিতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বেসরকারি বিনিয়োগে স্থবিরতা এবং ব্যাংক খাতে আস্থাহীনতাকে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী আর্থিক কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :