সবুজে বাঁচুক সিরাজগঞ্জ নিজ উদ্যোগে গাছ বিতরণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শহিদুল ইসলাম। সিরাজগঞ্জ শহরের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ ও হাঁটার স্থান হার্ডপয়েন্টে সম্প্রতি এক ব্যতিক্রমী দৃশ্যের জন্ম দিয়েছেন পরিবেশপ্রেমী শহিদুল ইসলাম। নিজ উদ্যোগে, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অর্থায়নে, প্রতিনিয়ত তিনি গাছের চারা বিতরণ করে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের মাঝে। সকালবেলা যারা হার্ডপয়েন্টে হাঁটতে আসেন কিংবা বিকেলে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা—তাদের হাতে নিজে দাঁড়িয়ে তিনি তুলে দিচ্ছেন একেকটি সবুজ চারা।
প্রতিটি চারার সঙ্গে যেন জড়িয়ে রয়েছে একটি করে সবুজ স্বপ্ন—পরিবেশ রক্ষার অঙ্গীকার। শহিদুল ইসলাম বলেন, “একটি গাছ শুধু ছায়া বা ফলই দেয় না, এটি আমাদের প্রাণ বাঁচায়। আজ যে গাছ রোপণ করছি, সেটি একদিন আমার সন্তান, আমাদের আগামী প্রজন্মকে দেবে ঠাণ্ডা বাতাস, বিশুদ্ধ অক্সিজেন আর নিরাপদ আবাস।”
এই মহৎ উদ্যোগ শুধুই একটি দিন বা একবারের আয়োজন নয়—তিনি এটি সাপ্তাহিক রুটিন হিসেবে পালন করছেন। নিয়মিতভাবে নিজ অর্থায়নে গাছ কিনে তা জনসাধারণের মাঝে বিতরণ করছেন তিনি। এভাবেই প্রতিনিয়ত এক নিঃশব্দ আন্দোলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ ও সচেতনতা।
এটাই তার প্রথম কাজ নয়। এর আগেও তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩ হাজার তালবীজ রোপণ করেছেন। শহরের রাস্তার পাশ, মাঠের ধারে, স্কুলের আঙিনায় এমন অনেক জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে তার হাতে লাগানো গাছের ছাপ।
গাছ বিতরণের সময় আশপাশে থাকা সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা যায় উৎসাহ ও প্রশংসার ঢল। অনেকেই গাছ হাতে নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে শহিদুল ইসলামের সঙ্গে ছবি তুলে স্মরণীয় করে রাখছেন এই মানবিক মুহূর্তটিকে।
একজন ব্যক্তি যখন নিজে থেকে, কোনো সরকারি বা সংগঠনের সহায়তা ছাড়াই পরিবেশ রক্ষায় এমন ভূমিকা নেন, তখন সেটি নিঃসন্দেহে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়ায়। শহিদুল ইসলামের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে—পরিবেশ রক্ষার লড়াইয়ে একটি মানুষের একার চেষ্টা অনেক বড় পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।
স্থানীয়রা বলছেন, শহিদুল ইসলামের মতো যদি আরও অনেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসেন, তাহলে একদিন সিরাজগঞ্জ হবে একটি সবুজ, প্রাণবন্ত এবং বাসযোগ্য শহর।
সবুজের এই যাত্রায় শহিদুল ইসলাম আজ শুধু একজন বৃক্ষপ্রেমী নন—তিনি হয়ে উঠেছেন একটি সবুজ ভবিষ্যতের স্বপ্নদ্রষ্টা ও পথপ্রদর্শক।
কালের সমাজ/হাকা
আপনার মতামত লিখুন :