ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

লামায় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলায় বসতঘর ও স্কুলে লুটপাট

কালের সমাজ | মো. ইসমাইলুল করিম, বান্দরবান প্রতিনিধি জুলাই ১২, ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম লামায় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলায় বসতঘর ও স্কুলে লুটপাট

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হায়দারনাশী এলাকায় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের হামলায় বসতবাড়ি ও স্কুলে ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় নারীসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় হায়দারনাশী গ্রামার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সাংবাদিক ফরিদুল আলম বাবলু সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।

 

শনিবার (১২ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টায় লামা সাংবাদিক ফোরাম কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফরিদুল আলম লিখিত বক্তব্যে জানান, তিনি হায়দারনাশী গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা এবং তার পরিবারের নামে দীর্ঘ ৪০-৪৫ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে থাকা দুই একর জমিতে বসতবাড়ি এবং একটি স্কুল রয়েছে।

 

তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় জাফর ইকবাল চৌধুরী, নজরুল ইসলাম, কুতুব উদ্দিন (প্রকাশ গুরা সোনামিয়া), মামুন, রেজাউল ও হারুনসহ প্রায় ৩০-৩৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে অতর্কিতে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে তার মা, স্ত্রী, ভাইয়ের স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের বেধড়ক মারধর করে এবং নারীদের শ্লীলতাহানি করে।

 

ফরিদুল আলম জানান, সন্ত্রাসীরা তার মা সাফিয়া বেগমকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে এবং ভাইয়ের স্ত্রী আসমাউল হোছনাকে কামড়ে মারাত্মক আহত করে। হামলাকারীরা বাড়ির তিনটি ঘর, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ, টিভি, সিসি ক্যামেরা, দলিলপত্র, স্কুলের ল্যাপটপসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া শিক্ষার্থী পরিবহনের একটি টমটম ও মোটরসাইকেলও লুট করা হয়।

 

হামলার সময় ফরিদুল আলম নিজেও হামলার শিকার হন এবং প্রাণ রক্ষার্থে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। তিনি বলেন, “হামলাকারীরা স্কুলে ঢুকে আমাকে হত্যার চেষ্টা করে, স্কুলের ল্যাব থেকে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, দাপ্তরিক কাগজপত্রসহ মূল্যবান জিনিস লুট করে নিয়ে যায়।”

 

তিনি আরও বলেন, “এর আগেও গত ৯ জুন আমাদের বসতবাড়িতে হামলা করে বাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলে এবং স্কুল ক্যান্টিন থেকে নগদ টাকা ও মালামাল নিয়ে যায়।” তিনি অভিযোগ করেন, এ পর্যন্ত তারা পাঁচবার প্রাণনাশের হুমকিসহ হামলার শিকার হয়েছেন। প্রতিবারই ৯৯৯-এ ফোন করে তিনি ও তার পরিবার রক্ষা পেলেও প্রশাসন থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

 

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদুল আলম জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলাকারীরা দীর্ঘদিন ধরে জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে তিনি লামা থানায় জিআর মামলা (নং ৪৩/২৫), সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানি মামলা (নং ৮০/২৫) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন (নং ৩৩/২৫) দায়ের করেছেন। এছাড়া একই বিষয়ে একটি ফৌজদারি মামলাও (সি.আর মামলা নং ১৪২/২০২৫) বিচারাধীন রয়েছে।

 

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদুল আলম প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সাংবাদিক সমাজের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, “আমাদের ওপর এমন বর্বর হামলা চালিয়ে জোরপূর্বক জায়গা দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা জীবন বাঁচাতে এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সকল মহলের সহযোগিতা চাই।”

 

কালের সমাজ//এসং.র.ন

Side banner

পথে-প্রান্তরে বিভাগের আরো খবর

Link copied!