ঢাকা সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

আয়কর রিটার্ন অডিটে নতুন নির্দেশনা জারি করল এনবিআর

কালের সমাজ | অর্থনীতি ডেস্ক আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম আয়কর রিটার্ন অডিটে নতুন নির্দেশনা জারি করল এনবিআর

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর রিটার্ন অডিট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। ‘আয়কর রিটার্ন অডিট নির্দেশনা, ২০২৫’ শিরোনামে প্রকাশিত এ গাইডলাইনে রিটার্ন যাচাই-বাছাই, অডিট পরিচালনা, প্রতিবেদন প্রস্তুত ও নিষ্পত্তির প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

রবিবার (১৭ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর এ তথ্য জানায়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘আয়কর আইন, ২০২৩’-এর ১৮০ ও ১৮২ ধারার ভিত্তিতে করদাতার রিটার্নে কোনো অসঙ্গতি বা ঝুঁকি চিহ্নিত হলে অডিটে আনা হবে। এর মূল উদ্দেশ্য করফাঁকি প্রতিরোধ, কর সংস্কৃতি উন্নয়ন এবং আইন বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

কীভাবে হবে রিটার্ন নির্বাচন

অডিটের জন্য রিটার্ন বাছাই হবে ঝুঁকিভিত্তিক পদ্ধতিতে। এজন্য একটি অটোমেটেড সিস্টেম ব্যবহার করা হবে, যাতে মানবীয় হস্তক্ষেপ সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকে। তবে কাগজে জমা দেওয়া রিটার্নের ক্ষেত্রে আপাতত র‌্যান্ডম বাছাই চলবে। কোম্পানি ও অন্যান্য করদাতার রিটার্ন আলাদাভাবে যাচাই করে বোর্ডের অনুমোদনের ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে।

প্রসেসকৃত রিটার্ন বা নতুন করদাতার প্রথম রিটার্ন সাধারণত অডিটে আনা হবে না, যদি না স্পষ্ট রাজস্ব ক্ষতি দেখা যায়। একই করদাতাকে টানা তিন বছর অডিটে না আনার বিধান রাখা হয়েছে। তবে লোকসান, শূন্য আয় বা অস্বাভাবিকভাবে কম আয় দেখালে সেই রিটার্ন অডিটে নেওয়া যাবে। এছাড়া আগে যাদের কখনও অডিট হয়নি, তাদের মধ্যে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ বাছাই করার নির্দেশনা রয়েছে।

অডিটের ধাপ

রিটার্ন নির্বাচনের পর ৩০ দিনের মধ্যে করদাতাকে নোটিশ দেওয়া হবে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হলে অডিট থেকে অব্যাহতি মিলতে পারে। অন্যথায়, কর পরিদর্শক মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে প্রমাণ সংগ্রহ করবেন এবং সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলে প্রতিবেদন দেবেন। করদাতা চাইলে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। করলে অডিট নিষ্পত্তি হবে, আর না করলে আইন অনুযায়ী কর নির্ধারণ করা হবে। অগ্রগতির মাসিক প্রতিবেদন বোর্ডে পাঠানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ব্যক্তি করদাতাদের জন্য বিশেষ নজরদারি

ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে বেতনভিত্তিক আয়, ব্যাংক হিসাব, ভাড়া আয়, কৃষি আয়, রেমিট্যান্স, বিনিয়োগ আয় ও জীবনযাত্রার ব্যয় খুঁটিনাটি যাচাই করা হবে। আয়ের সঙ্গে সম্পদ ও ব্যয়ের সামঞ্জস্য রয়েছে কিনা, তা বিশেষভাবে দেখা হবে।

কোম্পানি করদাতাদের জন্য অডিট

কোম্পানির ক্ষেত্রে নিরীক্ষিত হিসাব জমা বাধ্যতামূলক। টার্নওভার ও ব্যাংক জমার সঙ্গে ব্যয় মিলে কিনা, অপ্রাসঙ্গিক খরচ দেখানো হয়েছে কিনা, উৎসে কর সঠিকভাবে কাটা হয়েছে কিনা— এসব খুঁটিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি নতুন ঋণ বা দেনা যথাযথভাবে প্রদর্শিত হয়েছে কিনা এবং আয়কর আইনের প্রাসঙ্গিক ধারা অনুসরণ করা হয়েছে কিনা, তা-ও যাচাই করা হবে।

এনবিআর জানিয়েছে, নতুন এই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলে অডিট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে, রাজস্ব আয় বাড়বে এবং করদাতাদের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে।

কালের সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!