চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যে সাবেক সমন্বয়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদের বাসা থেকে দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থার মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
ডিএমপি জানায়, ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য উঠে আসে। কলাবাগান থানায় এ ঘটনায় নতুন করে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এর আগে ২৬ জুলাই সন্ধ্যার পর গুলশান ৮৩ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে পাঁচজন। তারা হলেন—মো. সাকাদাউন সিয়াম (২২), নাটোরের সাদমান সাদাব (২১), আমিনুল ইসলাম (১৩), ইব্রাহীম হোসেন (২৪) এবং আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ (২৫)।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে রিয়াদ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা এবং ঢাকার ধানমন্ডির নিউ মডেল এলাকায় বসবাস করেন। ইব্রাহীম চাঁদপুরের রামদাসদী গ্রামের এবং আমিনুল বাড্ডার আলাতুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
গ্রেপ্তারের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহীম হোসেন, সদস্য সিয়াম ও সাদমান সাদাবকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদকে সংগঠনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
পুলিশের আবেদনে ২৭ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত রিয়াদসহ চারজনের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে রিয়াদ ও অপু নামের এক ব্যক্তি গুলশানের ৮৩ নম্বর সড়কের একটি বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযুক্তদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তারা। এতে বাসার মালিক সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে নগদ ৫ লাখ এবং তার ভাইয়ের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকাসহ মোট ১০ লাখ টাকা দেন।
পরবর্তীতে ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিয়াদ ও অপু ফের ওই বাসায় গিয়ে দরজায় ধাক্কা মারেন। বিষয়টি গুলশান থানা পুলিশকে জানালে তারা চলে যান।
২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রিয়াদের নেতৃত্বে আবারও আসামিরা বাসায় যান এবং বাকি ৪০ লাখ টাকা না দিলে গ্রেপ্তার করানোর হুমকি দেন। এরপর গুলশান থানা পুলিশ গিয়ে তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। তবে অভিযুক্ত অপু ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীত সারাদেশের সব কমিটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রিফাত রশিদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সংগঠন অপরাধের দায় স্বীকার করে এত বড় সিদ্ধান্ত নেয়নি। এখন অনেকে রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। যারা আমাদের ব্যানার ব্যবহার করে অপরাধ করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আহ্বান জানাচ্ছি।”
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :