কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ৬৩ নং বেথইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. তাহমিনা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে কটিয়াদী উপজেলার স্বপ্নকুঞ্জ কমিউনিটি সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা মোছা. তাহমিনা রহমান বলেন-বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিসেস সাদেকা ইয়াসমিন তার নিজস্ব অপকর্ম ও দুর্নীতি আড়াল করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সহকারী শিক্ষিকা তাহমিনা রহমানকে জড়িয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন। লিখিত বক্তব্যে সহকারী শিক্ষিকা আরও জানান প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা না রেখে স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম করা হচ্ছে, এবং এসব বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় আমাকে হয়রানি ও মানহানিকর পরিস্থিতিতে ফেলার অপচেষ্টা চলছে।
এছাড়াও আমার উপর দীর্ঘদিন যাবত চলতে থাকা মানসিক নির্যাতন, দুর্ব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ হয়ে আমি গত ৩০শে জুন উনার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহোদয় বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করি। অভিযোগপত্রে প্রধান শিক্ষিকা মিসেস সাদেকা ইয়াসমিন আমার দায়িত্ব পালনে অসহযোগিতা, প্রয়োজনের সময় ছুটি না দেওয়া, আমাকে অন্য শিক্ষিকার চেয়ে বেশি সময় ক্লাস দেয়া, চাকরি ছেড়ে দিতে এবং অন্যত্র বদলি হতে চাপ দেয়া ইত্যাদি উপায়ে আমাকে মানসিক নির্যাতনের কথা তুলে ধরি।
এছাড়া, প্রধান শিক্ষিকার পারিবারের লোকজন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা, স্লিপ প্রণয়ন দল ও সামাজিক নিরীক্ষা কমিটিতে উনার আত্মীয় স্বজনদের মনোনয়ন ইত্যাদি স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ও উল্লেখ করি।
প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বিগত অর্থ-বছরগুলোতে বিদ্যালয় পরিচালনা ও উন্নয়ন বাজেটের টাকা আত্মসাৎ, কাজ সম্পন্ন না করেই স্লিপ ও ক্ষুদ্র মেরামতের টাকা ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করা ইত্যাদি বিষয়েও অভিযোগে আনা হয়।
অভিযোগ দাখিলের বেশ কিছুদিন পর তদন্ত নোটিশ আসলে গত ২৩ জুলাই তদন্তের দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক পূর্বেই টের পেয়ে যান এবং অভিযোগকে দুর্বল করার জন্য তিনি কৌশলে ৩ বছর ধরে পারিবারিকভাবে ব্যবহার করতে থাকা ল্যাপটপ স্কুলে নিয়ে আসেন এবং তড়িঘড়ি করে কিছু কাজ করেন।
প্রধান শিক্ষক নিজের দুর্নীতি ও অপকর্ম আড়াল করতে ও তদন্ত কার্যক্রমকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সমকালসহ স্থানীয় পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ প্রচার করিয়েছেন। আমি প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি। পাশাপাশি সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাকে মানসিক নির্যাতন থেকে মুক্ত করতে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উর্ধ্বমুখী করার ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মোছা. তাহমিনা রহমানের বোন উম্মে আইমন, ভাগনী সাইরিন, শ্বাশুড়ি ফাতেমা আক্তার, বেথইর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক তানজিনা, ফাতেমা আক্তার, শিউলী আক্তার, সোমা আক্তার, ডলি বেগম সহ কিশোরগঞ্জ জেলা ও পার্শ্ববর্তী কুলিয়ারচর উপজেলাসহ কটিয়াদী উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :