পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশ চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে বিভক্ত মতামত দেখা দিয়েছে।
নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি অফিস কক্ষগুলো নিরপেক্ষতার প্রতীক হওয়া উচিত। সেখানে শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের প্রতীকী ব্যক্তিত্বের ছবি ঝুলিয়ে রাখা পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলন করে। তাদের দাবি, দেশের ইতিহাসে যেসব জাতীয় নেতা অবদান রেখেছেন, তাদের সবাইকে সমান মর্যাদা দিতে হবে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আজাহারুল ইসলাম টুটুল বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে শেখ হাসিনা সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এককভাবে বঙ্গবন্ধু ও নিজের ছবি ঝুলিয়ে রেখেছেন। স্বাধীনতার ইতিহাসে অন্যান্য দলেরও অবদান আছে, তা অস্বীকার করা যায় না। তাই আমরা এই একক চর্চার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি।”
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রেজাউল কবির জানান, “প্রধান শিক্ষক বঙ্গবন্ধুর ছবি অপসারণে অনাগ্রহী। আমরা একাধিকবার বললেও তিনি গুরুত্ব দেননি।”
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিন বলেন, “আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমরা বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ করি। তাই অফিস কক্ষে তাঁর ছবি রাখা হয়েছে। এটা অপসারণের কোনো প্রশ্নই আসে না।”
এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গিয়াস উদ্দীন বলেন, “সরকারি কোনো নির্দেশনা ছাড়াই উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে ওই বিদ্যালয়ে এখনো কেন ছবি টাঙানো আছে, তা প্রধান শিক্ষিকার কাছে জানতে চাওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নেছারাবাদ উপজেলার বেশিরভাগ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলা হয়। তবে সোনারঘোপ রমেশ চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এখনো বঙ্গবন্ধুর ছবি দৃশ্যমান রয়েছে, যা এই উত্তেজনার মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :