মাদারীপুর সদর উপজেলার কুমার নদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের বাধার মুখে ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দিলে সাংবাদিকসহ তিনজনকে চোখ তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন অভিযুক্ত ড্রেজার ব্যবসায়ী ওবায়দুল ফরাজি।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের রায়েরকান্দী শ্রীনদী গ্রামে একদল ব্যক্তি কুমার নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছিল। ডাকাত সন্দেহে স্থানীয়রা “ডাকাত, ডাকাত” বলে চিৎকার শুরু করলে ড্রেজারকর্মীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী ড্রেজার মেশিনটি জব্দ করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ ঘটনার পর শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে মাদারীপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার রাজৈর উপজেলা প্রতিনিধি সোহেল শিকদার। তিনি জানান, ঘটনার পর রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুক লাইভে এসে স্থানীয় প্রভাবশালী ওবায়দুল ফরাজি তাকে, জিয়াউল হক বাবুল খালাসী এবং পলাশ খালাসীকে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেন এবং চোখ তুলে নেওয়ার হুমকি দেন।
সোহেল শিকদারের ভাষ্যমতে, ওবায়দুল ফরাজি নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কুমার নদে বালু উত্তোলনের সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করলেও সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করছেন পুরো কার্যক্রম।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ওবায়দুল ফরাজি ও তার অনুসারীরা নিয়মিত কুমার নদ থেকে বালু তুলছেন, যার ফলে নদীর পাড় ধসে পড়ছে, বসতভিটা ও কৃষিজমি হুমকির মুখে পড়েছে। প্রশাসনকে বহুবার জানানো হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান তারা।
এক বাসিন্দা বলেন, “প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বাধ্য হয়েই আমরা প্রতিরোধে নামতে বাধ্য হয়েছি।”
এলাকাবাসীর দাবি, শ্রীনদী পুলিশ ফাঁড়ির কাছেই গভীর রাতে নির্বিঘ্নে চলে বালু উত্তোলন। কেউ প্রতিবাদ করলেই ভয়ভীতি ও হুমকির মুখে পড়তে হয়।
এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. নাঈমুল হাসান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। হুমকির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :