গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা এলাকায় প্রতারণার মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করে জমি বিক্রি ও দখলের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষা ও প্রতারক চক্রের হাত থেকে মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী আবুল হোসেন (৭৫) ও তার পরিবারের সদস্যরা।
জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, তার বাবা হেকমত আলীর মালিকানাধীন জয়দেবপুর থানাধীন মাহনা ভবানীপুর মৌজার এসএ খতিয়ান ৫৭৪, আরএস খতিয়ান ২৩৫ ও এসএ দাগ ৩০৭ এবং আরএস দাগ ৪০৩, ৪০৪ ও ৪০৯-এ মোট ৭ একর ১২ শতাংশ জমি ছিল। পৈত্রিক সূত্রে এর মধ্যে তিনি ১ একর ৯২ শতাংশ জমির মালিক হন এবং ভোগদখল করে আসছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ২০১২ সালে স্থানীয় সাখাওয়াত হোসেন ও শাহজাহান ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে ওই জমির ১ একর ৭৫ শতাংশ অংশ মুন্সীগঞ্জের মাখাটি গ্রামের নাসিমা রেখা নামে এক নারীর কাছে বিক্রি করে। ওই সময় নাসিমা নিজেকে আওয়ামী লীগ নেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করে নেয়।
ভুক্তভোগীর দাবি, জমি দখল ও খারিজে সহায়তা করে গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার আব্দুল বাতেনের ঘনিষ্ঠ হারুন-অর-রশীদ এবং মির্জাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তৎকালীন নায়েব আব্দুল লতিফ। ২০১২ সালের ২ জুলাই আমমোক্তার নূরুল ইসলামের মাধ্যমে প্রথমে ১ একর ৮৩ শতাংশ জমি খারিজ করা হয়। তার একদিন পর ৩ জুলাই দলীয় প্রভাব খাটিয়ে একই জমি নাসিমা রেখার নামে খারিজ করা হয়। এ বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর খারিজ বাতিলের আবেদন করা হলে সাখাওয়াত ও শাহজাহান দ্রুত ওই জমি স্থানীয় কয়েকজনের কাছে বিক্রি করে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, সাখাওয়াত হোসেন জাল দলিল, ভূয়া চুক্তিপত্র তৈরি, মাস্তান দিয়ে জমি দখল, পুলিশি হুমকি এবং দুর্নীতির মাধ্যমে প্রতারণা করে চলেছেন। তার কারণে আবুল হোসেন ও তার পরিবার জমি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে তারা দিনমজুরি করে জীবিকা চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “নাসিমা রেখা তার ১ একর ৭৫ শতাংশ জমি ব্যাংকের কাছে বন্ধক দিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে আমি তার সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করে জমিটি ক্রয় করি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।”
ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে জমি উদ্ধার ও প্রতারক চক্রের বিচার দাবি করেছেন।
কারের সমাজ//এসং//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :