জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা গণঅভ্যূত্থানের পরে বলেছিলাম ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলুপ্ত করতে হবে। নতুন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, চাঁদাবাজ, দুর্নীতি ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু আমরা দেখছি রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে রক্তের দাগ লেগে রয়েছে। নিজেদের মধ্যে খুনা খুনি করছে। সবার হাতেই রক্ত লেগে রয়েছে।
আমরা রাজনৈতিক সংহিসতা মুক্ত বাংলাদেশের সংস্কৃতি দেখতে চেয়েছিলাম, চাঁদা মুক্ত অর্থনীতি দেখতে চেয়েছিলাম। তরুন প্রজন্মের শক্তি এখনও ঘুমিয়ে যায়নি তারা রাজপথে এসেছে, বাংলাদেশকে চাঁদাবাজ, দুর্নীতি ও বৈষম্য মুক্ত করেই আমরা ঘরে ফিরবো ইনশআল্লাহ।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শ্লোগানকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দিবাগত রাতে বরিশাল নগরীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির আয়োজনে নগরীর অমৃত লাল দে কলেজের সামনে থেকে এনসিপি`র পদযাত্রা শুরু হয়ে নগরীর ফজলুল হক অ্যাভিনিউ সড়কের নগর ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরবর্তীতে সেখানে রাত নয়টা থেকে শুরু হয়ে ঘন্টাব্যাপী পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে বরিশালের কৃতি সন্তান শেরে বাংলা একে ফজলুল হক ও মহাপ্রান যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এই দুই মহৎ রাজনীতিবিদের রাজনীতিকে পুনরুত্থান ঘটাবে এনসিপি।
আগামী ৩ আগস্ট ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্র আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে বরিশালের সর্বস্তরের মানুষকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট আমাদের লক্ষ্য ছিলো গণভবন, এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সংসদ ভবন। তাই জেলা, উপজেলাসহ প্রতিটি ইউনিটে এনসিপির কমিটি গঠন করে দলকে গতিশীল করতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নাহিদ বলেন, যদি কেউ এনসিপির কোন সদস্যর ওপর চোখ রাঙিয়ে কথা বলেন তাদের দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে। বক্তব্যের শুরুতে নাহিদ ইসলাম বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, মোরা দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা শুরু হরছি। মোগো লাগে বরিশালবাসী আছেনতো।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বর্তমান নির্বাচন কমিশনারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কঠোর সমালোচনা করে বলেন, নির্বাচন কমিশনারের রিমোট কন্ট্রোল কি ভারত থেকে নাকি সেনাবাহিনী থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তারা (নির্বাচন কমিশনার) শাপলা প্রতীক দিতে কেন গড়িমসি করছে।
তিনি আরও বলেন, নৌকাকে ব্যালট থেকে বাদ দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে পুনঃগঠন প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, আগে ভোট চোর বললে একটি দলের গায়ে লাগতো, এখন চাঁদাবাজ বললে আরেকটি দলের গায়ে লাগে। কারণ দেশে একটি কথা এখন প্রচলিত হয়েছে “যদি থাকতে চাও জিন্দা-দিতে হবে চান্দা”। এই চাঁদাবাজদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।
হাসনাত আরও বলেন, মির্জা ফকরুল ইসলাম সাহেব বলেছেন-তারেক রহমানকে নিয়ে কথা বললে নাকি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। এসব কথা তার মুখে মানায় না, কারণ রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে কোন দল বা ব্যক্তি নয়।
আমাদের দল (এনসিপি) ক্যান্টনমেন্ট থেকে জন্ম নেয়নি। সংকট থেকে এনসিপির জন্ম। তাই যেকোনো সংকট মোকাবেলা করার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি। এনসিপির একজন সাধারণ সদস্যের গায়েও যদি কেউ হাত তোলে তাদের দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনীম জারা, কেন্দ্রীয় নেত্রী নাহিদা সরোয়ার নিভা, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজিনা, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
কালের সমাজ//এসং.র.ন
আপনার মতামত লিখুন :