ঢাকা সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

গোপালগঞ্জে নিহত চারজনের ময়নাতদন্ত না হওয়া নিয়ে হাসপাতালের ব্যাখ্যা

কালের সমাজ | নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ২০, ২০২৫, ০৭:১৪ পিএম গোপালগঞ্জে নিহত চারজনের ময়নাতদন্ত না হওয়া নিয়ে হাসপাতালের ব্যাখ্যা

গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত চারজনের ময়নাতদন্ত না হওয়াকে ঘিরে দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ময়নাতদন্ত না করে লাশ হস্তান্তর করেনি।


হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সংবাদকর্মীদের কাছে পাঠানো হয়।


“হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে ময়নাতদন্ত না করে লাশ হস্তান্তর করেছে—এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য। প্রকৃত ঘটনা হলো, প্রথম মৃতদেহটি জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন এবং নিয়ম অনুযায়ী ময়নাতদন্তের প্রস্তুতির কথা জানান। কিন্তু স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং জোরপূর্বক লাশটি নিয়ে যান।”


পরবর্তীতে বাকি তিনজনের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বলে জানানো হয়। তাদের স্বজনরাও ময়নাতদন্তে রাজি হননি এবং হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে জোর করে লাশ নিয়ে যান।


ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, “ঘটনার সময় বাইরে সংঘর্ষ চলছিল এবং হাসপাতালে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল না। ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায়। আহতদের চিকিৎসায় তখন সকল ডাক্তার-নার্স ও কর্মচারী ব্যস্ত ছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হলেও তখন তা সম্ভব হয়নি। তবে পরে পুলিশকে ফোন ও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।”


গত বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। তারা হলেন—দীপ্ত সাহা (৩০), রমজান কাজী (১৭), সোহেল রানা (৩৫) এবং ইমন। ঘটনার দিন রাতেই সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের দাফন ও দাহ করা হয়।


পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, প্রয়োজনে নিহতদের কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হতে পারে। তবে দীপ্ত সাহার দাহ সম্পন্ন হওয়ায় তার বিষয়ে আর কিছু বলা হয়নি।


এছাড়া, গুরুতর আহত আরও তিনজনকে সেদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে একজন—রমজান মুন্সী—পরদিন রাতে মারা যান। তার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।


বর্তমানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আরও দুইজন—সুমন বিশ্বাস ও আব্বাস আলী—ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন।


ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, “গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল সবসময় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে আত্মনিয়োজিত। আমরা আশা করি, এই ব্যাখ্যার মাধ্যমে জনমনে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে।”


কালের সমাজ//এসং.র.ন

Side banner
Link copied!