ঢাকা শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২

নালিতাবাড়ীর আশ্রয়ণ ঘরে বসতি নেই, প্রকৃত গৃহহীনরা বঞ্চিত

কালের সমাজ | সাফিজল হক তানভীর, শেরপুর প্রতিনিধি জুলাই ২৭, ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম নালিতাবাড়ীর আশ্রয়ণ ঘরে বসতি নেই, প্রকৃত গৃহহীনরা বঞ্চিত

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর তীরে নির্মিত মরিচপুরান ইউনিয়নের ভোগাইপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত ৭০টি ঘরের মধ্যে প্রায় ৪০টিতেই ঝুলছে তালা। এসব ঘরের উপকারভোগীরা অনেক আগেই চলে গেছেন, কেউ রাজধানীসহ অন্য শহরে, কেউ আবার ফিরে গেছেন আগের বসতবাড়িতে। ফলে প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।

এই প্রকল্পে ঈদ বা উৎসব ছাড়া খুব কমই ঘরের দরজা খোলা দেখা যায়। কর্মসংস্থান না থাকায় উপকারভোগীদের অনেকেই টিকে থাকতে পারেননি। কেউ কেউ নামমাত্র দখল রেখে বিকল্প স্থানে চলে গেছেন, এমনকি ঘর বিক্রির অভিযোগও শোনা যাচ্ছে।

সরকারি তথ্যমতে, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ২০২৩ সালে শেরপুরের পাঁচটি উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় নালিতাবাড়ীতেও শত শত পরিবারকে ঘর প্রদান করা হয়। কিন্তু বাস্তবে অনেক ঘরই পড়ে আছে তালাবদ্ধ। ভোগাইপাড় এলাকায় নির্মিত ৭০টি ঘরের মধ্যে প্রায় অর্ধেক এখন উপকারভোগীশূন্য।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খাস জমিতে তৈরি এসব ঘরের সঙ্গে বিদ্যুৎ, পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা থাকলেও, সেখানে জীবিকার ব্যবস্থা নেই। ফলে ঘর পেয়ে উপকারভোগীদের বড় একটি অংশ চলে গেছেন কাজের খোঁজে।
ইয়াসমিন আক্তার জানান, কিছু দরিদ্র মানুষ ঘর পাওয়ার আশায় তালাবদ্ধ ঘরগুলোর বরাদ্দ বাতিল করে তাদের নামে বরাদ্দ চাইছে। অনেক প্রকৃত গৃহহীন ঘড় থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ।

স্থানীয় বাসিন্দা চাম্পা বেগম বলেন, সরকার ঘর দিছে, কিন্তু কাজের ব্যবস্থা নাই। এজন্য অনেকেই বাইরে থাকে, মাঝে মাঝে আসে। আবার চলে যায়।

আমিনুল ইসলাম নামে আরেকজন জানান, এখানে অনেক ঘর এমন মানুষের নামে বরাদ্দ হয়েছে, যাদের নিজেরই বসতবাড়ি আছে। তাই তালাবদ্ধই থাকে।

স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন, যারা প্রকৃতপক্ষে ঘরে বসবাস করছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুন করে প্রকৃত গৃহহীনদের সুযোগ দেওয়া হোক। এ বিষয়ে মরিচপুরান ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, কয়টি ঘর তালাবদ্ধ আছে, সেটা খোঁজ নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, ঘর পেয়ে ব্যবহার না করাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কালের সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!