বিপর্যস্ত সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে অজানা ভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত জনজীবন। বিশেষজ্ঞরা এখনও সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারেননি ভাইরাসটি।সিরাজগঞ্জ জেলার অন্তর্গত কাজিপুর উপজেলায় একটি অজানা ভাইরাসের প্রকোপে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই উপজেলায় প্রায় ৯০% পরিবারে ভাইরাসটির সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে হালকা ঠান্ডা, কাশি এবং জ্বর দেখা দিলেও, ধীরে ধীরে জ্বরের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা এবং দুর্বলতা দেখা দেয়। তাদের জন্য দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়, যা প্রায় ৫-৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।এই ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে আক্রান্তরা সঠিকভাবে খাবার গ্রহণ করতে পারছেন না, এবং খানিকটা খাওয়ার পরই বমি বমি ভাব দেখা দেয়, যা অনেকসময় বমিতে পরিণত হয়।
বিশেষজ্ঞরা এই ভাইরাসটি সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারেননি। তাদের মতে, এটি ডেঙ্গু বা করোনাভাইরাসের মতো কিছু লক্ষণ প্রদর্শন করলেও এগুলোর কোনোটিই নয়। এই অজানা ভাইরাসের কারণে কাজিপুরের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।স্থানীয় চিকিৎসক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, "ভাইরাসটির প্রকৃতি এখনও পুরোপুরি বোঝা যায়নি। আমাদের দল প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং রোগীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছে।" তিনি আরও বলেন, "আমরা স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি।
"সম্প্রতি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল কাজিপুরে পাঠানো হয়েছে। তারা স্থানীয় চিকিৎসকদের সঙ্গে মিলে ভাইরাসটির প্রকৃতি এবং এর প্রতিরোধের উপায় নির্ধারণে কাজ করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. খুরশীদ আলম বলেন, "আমরা ভাইরাসটির প্রকৃত উৎস এবং সংক্রমণ পদ্ধতি জানার চেষ্টা করছি। যত দ্রুত সম্ভব এটি চিহ্নিত করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"এই ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে কাজিপুরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জনগণকে সচেতন থাকতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি, জনগণকে কোনো গুজবে কান না দিয়ে সঠিক তথ্যের জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ কিংবা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে।
তাদের মতে, স্থানীয় জনগণকে সচেতন করা এবং প্রাথমিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সবচেয়ে জরুরি।কাজিপুরের এই অজানা ভাইরাসের সংক্রমণ জনজীবনে যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে, তা মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ একযোগে কাজ করছে। তবে, পরিস্থিতি কতদিনে স্বাভাবিক হবে তা এখনও অনিশ্চিত।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :