ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২

‘ঘরের স্বাদ’ নিয়ে সফলতার পথে শারমিন সুলতানা

নিজস্ব প্রতিবেদক | অক্টোবর ২৮, ২০২৫, ০৪:২৫ পিএম ‘ঘরের স্বাদ’ নিয়ে সফলতার পথে শারমিন সুলতানা

গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার নারী উদ্যোক্তা শারমিন সুলতানা বর্তমানে উদ্যোক্তা জগতে একটি পরিচিত নাম। বেসরকারি একটি এনজিওতে দীর্ঘ ১৫ বছর চাকরির পাশাপাশি তিনি নিজের হাতে গড়া উদ্যোগ ‘ঘরের স্বাদ’ নিয়ে সফলতার পথে এগিয়ে চলেছেন।

শারমিনের উদ্যোগে তৈরি হয় ঘিয়ে ভাজা লাচ্ছা সেমাই, গরুর মাংসের আচার, নকশী পিঠা, নানান প্রকারের নাড়ু–লাড্ডু এবং মৌসুমি ফলের আচারসহ সম্পূর্ণ ঘরোয়া খাবার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে তাঁর ঘিয়ে ভাজা লাচ্ছা সেমাই ও গরুর মাংসের আচার।

ছোটবেলা থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন শারমিন। পারিপার্শ্বিক কারণবশত পেশাগত জীবন শুরু হয় চাকরির মাধ্যমে, তবে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন কখনো হারাননি। কর্মজীবী মা হিসেবে সন্তানদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ও ঘরোয়া খাবার তৈরির চিন্তা থেকেই তাঁর উদ্যোগের শুরু।

নিজের তৈরি লাচ্ছা সেমাইয়ের পেছনে রয়েছে এক মর্মস্পর্শী গল্প। বড় মেয়ে একবার বাজারের লাচ্ছা সেমাই খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি সিদ্ধান্ত নেন নিজ হাতে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সেমাই তৈরি করবেন। ইউটিউব দেখে শিখে একসময় কোর্স সম্পন্ন করে শুরু করেন নিজ হাতে লাচ্ছা সেমাই তৈরি। পরিবারের প্রশংসা ও আশেপাশের মানুষের আগ্রহ থেকেই শুরু হয় বিক্রি।

বর্তমানে তিনি প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ কেজি লাচ্ছা সেমাই বিক্রি করেন— সম্পূর্ণ ঘরোয়া ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে তৈরি হওয়ায় পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

নিজের সফলতার পাশাপাশি শারমিন অন্য নারীদেরও স্বপ্ন দেখাতে কাজ করছেন। তিনি ‘কাপাসিয়া উপজেলা নারী উদ্যোক্তা গ্রুপ’-এর এডমিন, যার সদস্য সংখ্যা এখন ৩০ হাজারের বেশি। এক বছর আগে মাত্র পাঁচজন সদস্য নিয়ে শুরু হওয়া এই গ্রুপ এখন নারী উদ্যোক্তাদের এক অনন্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এখানে দেশের বিভিন্ন জেলার উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন।

এছাড়া সরকারি-বেসরকারি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, অফলাইন প্রদর্শনী মেলা এবং উদ্যোক্তাদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে তিনি ও তাঁর টিম নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতি মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের গড়ে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

শারমিন বলেন,

“স্বপ্ন দেখি আমি একা নই—আমরা সবাই একসাথে, হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাব বহুদূর। প্রত্যন্ত গ্রামের নারীরাও গর্ব করে বলতে পারবে, ‘আমি উদ্যোক্তা, আমি আমার উপজেলা কাপাসিয়া থেকে কাজ করছি।’”

শেষে তিনি নারী উদ্যোক্তাদের এ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার জন্য হাসিনা আনসার আপুকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং সকল সদস্যের সাফল্য কামনা করেন।

 

কালের সমাজ/ সাএ

 

 

Side banner
Link copied!