পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ইটভাটা বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তে সীমান্ত সড়ক নির্মাণসহ সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রমে বড় ধরনের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ইটের সংকটে স্থানীয়ভাবে প্রায় সব উন্নয়ন প্রকল্প থমকে পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বিনিয়োগ ও শ্রমবাজারেও—কর্মসংস্থান কমে যাওয়ায় হঠাৎ বেড়ে গেছে ছিনতাই, চুরি-ডাকাতিসহ অপরাধ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার চাহিদা মেটাতে সদর উপজেলায় ১১টি এবং রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি ও লামাসহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৬০টি ইটভাটা ছিল। এর মধ্যে শুধু লামাতেই গড়ে ওঠে ৩৫টি ভাটা। তবে গত ৫ আগস্ট সরকারের পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ঘোষণা দেন, অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে সারাদেশে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট চালু করতে হবে। পাশাপাশি বান্দরবানে কোনো ভাটাই চালু রাখা হবে না।
কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা কার্যকর না হওয়ায় জেলার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে সংকট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন, পরিবেশ রক্ষার নামে নেওয়া এমন সিদ্ধান্ত নতুন সংকট তৈরি করছে। ঠিকাদার হুমায়ুন, রেজা ও সেলিম বলেন, নতুন ভাটা না হলেও পুরনো ভাটাগুলো শর্তসাপেক্ষে চালু রাখলে সমাধান মিলতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএসমং বলেন, “এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) অর্থায়নে তিন পার্বত্য জেলায় ১৩শ কোটি টাকার প্রকল্প চলছে। কিন্তু ইট সংকটে উন্নয়ন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, ইটের অভাবে দুর্গম এলাকার ঝিড়ি-ঝর্না থেকে পাথর তুলে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে, এতে জীববৈচিত্র্য ও পানির উৎস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জাবেদ রেজা বলেন, “নতুন-পুরনো যাই হোক, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালু রাখতে পরিবেশবান্ধব ভাটা চালু করা দরকার। দেশের অন্য জায়গার মতো বান্দরবানেও শর্তসাপেক্ষে ভাটা চালু রাখতে হবে।”
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :