প্রকৃতির সবুজে ঘেরা, শান্ত-নিরিবিলি পরিবেশ। চারদিকে গাছপালা, খোলা আকাশ আর পাশেই বয়ে চলা করতোয়া নদী। এমন মনোরম পরিবেশের মাঝে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি আজও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিকে জীবন্ত করে রেখেছে।
কুঠিবাড়িতে ঢুকতেই চোখে পড়ে পুরোনো লাল ইটের স্থাপনা, প্রশস্ত বারান্দা আর উঁচু দোতলা ভবন। ভেতরে ঢুকলে যেন মনে হয় সময় থেমে গেছে এক শতাব্দী আগে। কক্ষগুলোতে সাজানো আছে রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত আসবাবপত্র, লেখার টেবিল, চেয়ার, খাট ও আলমারি। দেয়ালে ঝুলছে তাঁর প্রতিকৃতি আর সাহিত্যকর্মের প্রদর্শনী। প্রতিটি নিদর্শন যেন নীরবে বলে চলে কবিগুরুর সৃষ্টিশীলতার গল্প।
স্থানীয়রা বলেন, শাহজাদপুর কুঠিবাড়িতে বসেই রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছিলেন বহু অমর সাহিত্যকীর্তি। এখানে গ্রামীণ জীবনের সহজ-সরল মানুষদের কাছ থেকে তিনি পেয়েছিলেন অনুপ্রেরণা। প্রকৃতির সান্নিধ্যে থেকে তিনি বাঙালির জীবন, দুঃখ-কষ্ট ও আনন্দকে সাহিত্যে ফুটিয়ে তুলেছিলেন।
প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী আসেন এখানে। কবিতাপ্রেমী, সংস্কৃতিবিদ কিংবা সাধারণ ভ্রমণপিপাসু—সবাই এসে মুগ্ধ হন রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির সৌন্দর্যে। অনেকে ঘুরে বেড়ান উঠোনে, কেউ বসে পড়েন বারান্দায়; যেন অনুভব করেন কবিগুরুর উপস্থিতি।
শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি তাই শুধু একটি স্থাপনা নয়—এটি একটি জীবন্ত ইতিহাস, সাহিত্যচর্চার পীঠস্থান এবং বাঙালি জাতির জন্য এক অমূল্য সম্পদ। কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই কুঠিবাড়ি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জাগিয়ে রাখবে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি, সাহিত্য ও অনুপ্রেরণার দীপ্তি।
কালের সমাজ/ রা.হ/ সাএ
আপনার মতামত লিখুন :