ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়ে পরে হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে যাওয়া রিকশাচালক মো. আজিজুর রহমান অবশেষে জামিন পেয়েছেন। রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলামের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলা না থাকায় কারামুক্তিতে এখন আর কোনো বাধা নেই।
এর আগে আসামির আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী জামিনের আবেদন করলে রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। পরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে গণপিটুনির মুখে পড়েন রিকশাচালক আজিজুর। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন জুলাই অভ্যুত্থান-সংক্রান্ত একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তাকে আদালতে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানো হয়।
এই ঘটনায় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আজিজুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলার মূল আসামি নয়, বরং সন্দেহভাজন হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে জানায়, রিকশাচালক আজিজুরকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো তা জানতে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে কোনো অসংগতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মামলায় আজিজুরের সম্পৃক্ততা থাকলে তদন্ত শেষে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশের নেতৃত্বে গুলি, পেট্রোলবোমা ও হাতবোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন মো. আরিফুল ইসলাম। দীর্ঘ চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।
পরে চলতি বছরের ২ এপ্রিল আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১০০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :