যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারেট নিউজ-এ নিবন্ধ লিখেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নিবন্ধে তিনি গত বছরের গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন, নির্বাচন ও সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
ড. ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি রাষ্ট্রের কোনো নির্বাচিত বা নিযুক্ত পদে থাকবেন না।
তিনি বলেন, “আমার সরকারের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের কাছে তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরতে পারবে। বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকসহ সব যোগ্য ভোটার যেন ভোট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা এটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
নিবন্ধে ড. ইউনূস বলেন, গত বছরের গণঅভ্যুত্থান দেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ছাত্রনেতারা এবং সাধারণ জনগণ স্বৈরাচারী শাসকের পতনের আন্দোলন চালিয়ে তা বাস্তবায়ন করেছিলেন। এরপর দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপে স্বৈরাচারী শাসকের বিদায়ের পর তিনি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, “আমরা সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন এবং সরকারি তছরুপ হওয়া অর্থ উদ্ধার করেছি। এছাড়া পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনী তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।”
ড. ইউনূসের নিবন্ধে বলা হয়, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হলো রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা, ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে স্বৈরাচার পুনরায় সৃষ্টি না হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের সহায়তা আমাদের এগিয়ে যেতে সহায়ক হয়েছে। বাংলাদেশ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির একটি কেন্দ্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।”
ড. ইউনূস নিবন্ধে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর তিনি কোনো সরকারি পদে থাকবেন না এবং সরকারের অগ্রাধিকার হবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আয়োজন।
সূত্র: ডেসারেট নিউজ
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :