সিরাজগঞ্জের ফুলজোড় নদীতে চিরায়ত ঐতিহ্যবাহী পানশী নৌকা বাইচের সমাপনী দিনে জারি ও সারি গানের মূর্ছনায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল নদীর দুই পাড়। এ বছরের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ছিল বিশেষত প্রাণবন্ত, কারণ এতে অংশগ্রহণ করেছে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রতিযোগীরা।
ফুলজোড় নদীর পাড়ে স্থানীয় উৎসুক জনতা থেকে শুরু করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে এক উল্লাসমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। নদীর শীতল বাতাসে ভেসে আসা জারি ও সারি গানের সুরে সবাই মুগ্ধ হয়ে যায়। প্রতিযোগিতার প্রতিটি মুহূর্ত ছিল রোমাঞ্চকর, কারণ নৌকা বাইচের প্রতিযোগীরা নিজেদের সর্বোচ্চ দক্ষতা প্রদর্শন করে বিজয়ী হওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করেছেন।
স্থানীয় এক প্রবীণ গ্রামবাসী জানান, `প্রতি বছর এই নৌকা বাইচ আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। নতুন প্রজন্মকে এই ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত করানোর জন্য এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর কিছু হতে পারে না।`
এক প্রতিযোগী বলেন, `এবারের প্রতিযোগিতা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু সবার সহযোগিতায় আমরা খুব ভালোভাবে পারফর্ম করতে পেরেছি।`
বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ হিসেবে নৌকা বাইচের ঐতিহ্য বহু পুরনো। এই প্রতিযোগিতা শুধু বিনোদনই নয়, বরং গ্রামীণ অর্থনীতি ও সামাজিক সংহতিরও প্রতীক হিসেবে কাজ করে। জারি ও সারি গানের ঐতিহ্যবাহী পরিবেশনা এই প্রতিযোগিতাকে আরও উপভোগ্য করে তোলে।
নৌকা বাইচের মত এমন ইভেন্টগুলো স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণ ও প্রচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ধরনের প্রতিযোগিতা স্থানীয় সম্প্রদায়কে একত্রিত করে এবং শিকড়ের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।
এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকলে গ্রামীণ সংস্কৃতির সমৃদ্ধি ও বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া, পর্যটকদের আকর্ষণ করা এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক বিকাশেও সহায়ক হতে পারে।
সিরাজগঞ্জের এই নৌকা বাইচের সমাপ্তি হলেও এর সুর ও সঞ্জীবনী শক্তি স্থানীয় জনগণের মনে দীর্ঘদিন ধরে অনুরণিত থাকবে। এরকম আয়োজনের মাধ্যমে গ্রামীণ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :