ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট, ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক উল্টে নিহত অন্তত ২৫

কালের সমাজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ৭, ২০২৫, ১০:২৭ এএম গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক উল্টে নিহত অন্তত ২৫

গাজা উপত্যকায় ত্রাণের অপেক্ষায় জড়ো হওয়া মানুষের ওপর একটি ত্রাণবাহী ট্রাক উল্টে গিয়ে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই দুর্ঘটনায় আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।

তুরস্কভিত্তিক বার্তা সংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বুধবার (৬ আগস্ট) ইসরায়েলি হামলায় গাজার বিভিন্ন স্থানে আরও ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাদের চাপের কারণে ত্রাণবাহী যানটি একটি অনিরাপদ পথে চলতে বাধ্য হয়, এবং সেখানেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। যদিও ঘটনাস্থল সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

একটি চিকিৎসা সূত্র জানায়, রাফাহ শহরের পশ্চিমাঞ্চলে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অপেক্ষারত অবস্থায় ইসরায়েলি গুলিতে পাঁচজন নিহত হন। একই দিনে মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে এক এপার্টমেন্টে বিমান হামলায় একই পরিবারের পাঁচ সদস্য প্রাণ হারান, আহত হন আরও অন্তত ২০ জন।

গাজা শহরের একটি ত্রাণশিবিরে ড্রোন হামলায় ছয় মাস বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে। ওই শহরের আরও দুটি বাড়িতে চালানো হামলায় প্রাণ গেছে আরও অন্তত আটজনের, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
এছাড়া, দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে একটি আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে গুলিবর্ষণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

আনাদোলুর তথ্যমতে, গত ১৮ বছর ধরে গাজা অবরুদ্ধ এবং চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল সব সীমান্তপথ বন্ধ করে রাখায় ত্রাণ প্রবেশে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ২৪ লাখের বেশি মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে।
গাজার প্রশাসনের তথ্যমতে, গত ২৭ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ৮৪৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে, যেখানে প্রতিদিন প্রয়োজন প্রায় ৬ হাজার ট্রাক।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তার জন্য আসা ১ হাজার ৫৬৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১১ হাজার ২৩০ জন।

গাজার স্থানীয় সরকার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে “ক্ষুধা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি” করার জন্য দায়ী করেছে। তাদের অভিযোগ, নিরাপত্তা না দিয়ে দুর্গম ও বিপজ্জনক রাস্তায় ত্রাণ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যেখানে আগেই বহু মানুষ অনাহারে ভুগছেন।

বিভিন্ন মহল ইসরায়েলের ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাকে “ক্ষুধার্তদের জন্য মৃত্যুকূপ” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযান এখন পর্যন্ত গাজায় ৬১ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটিয়েছে। এই যুদ্ধ গাজার ভৌগোলিক ও মানবিক কাঠামোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা আরও বাড়িয়েছে।

কালেরর সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!