ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট, ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক অযৌক্তিক ও অন্যায্য: ভারত

কালের সমাজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ৭, ২০২৫, ১০:৩৩ এএম ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক অযৌক্তিক ও অন্যায্য: ভারত

ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্তে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে নয়াদিল্লি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া এই পদক্ষেপকে “অন্যায্য, অযৌক্তিক ও মেনে নেওয়া যায় না” বলে মন্তব্য করেছে ভারত সরকার।

রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানিকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় ভারতের বেশ কয়েকটি প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে, যা এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। এই সিদ্ধান্ত ভারতের টেক্সটাইল, যানবাহনের যন্ত্রাংশ, টায়ার, রাসায়নিক, কৃষি-উৎপাদন ও হীরা রপ্তানিতে বড় ধরনের ব্যয় বৃদ্ধি ঘটাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি এবং সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ এবং ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাজারভিত্তিক সিদ্ধান্ত। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কেবল ভারতকে লক্ষ্য করে বাড়তি শুল্ক আরোপ করা দুঃখজনক ও বিভ্রান্তিকর।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা আবারও স্পষ্ট করে বলছি—এই সিদ্ধান্ত অনৈতিক, অযৌক্তিক এবং একতরফা। ভারতের সার্বভৌম স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।”

ভারত পূর্বেও অভিযোগ করেছিল, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র নিজেই রাশিয়া থেকে আমদানি বজায় রাখার পক্ষে ছিল এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যেও কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্যে শুধু জ্বালানি নয়, রয়েছে সার, খনিজ, ইস্পাত, যন্ত্রপাতি, পরিবহন সরঞ্জামসহ আরও বহু পণ্য। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রও রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, প্যালেডিয়াম ও বিভিন্ন সার আমদানি করছে। “এই বাস্তবতায় কেবল ভারতকে টার্গেট করা নীতিগতভাবে অযৌক্তিক,” বলে দাবি নয়াদিল্লির।

এদিকে ট্রাম্প এক মন্তব্যে বলেন, “ভারত কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের ভালো বাণিজ্য অংশীদার ছিল না।” তিনি জানান, “আমরা আগে ২৫ শতাংশ শুল্কে রাজি হয়েছিলাম, কিন্তু এখন তা বাড়ানোর কথা ভাবছি, কারণ ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে।”

সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও বলেন, “ভারত রাশিয়া থেকে তেল নিয়ে সেই অর্থে যুদ্ধ চালানোর জ্বালানি দিচ্ছে। এই আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।”

বুধবার (৬ আগস্ট) স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বলেন, “রাশিয়ার বর্তমান নীতিমালা ও কর্মকাণ্ড মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতির জন্য এক বড় ধরনের হুমকি। এই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ একান্তই প্রয়োজনীয় ও যুক্তিসঙ্গত।”

কালেরর সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!