জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর সাক্ষ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি গণহত্যার শিকার পরিবারগুলো, আহত মানুষ, দেশবাসী এবং আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামুনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে চলমান মামলায় তিনি ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে হাজির হন।
জবানবন্দিতে তিনি বলেন, “৩৬ বছরের চাকরি জীবনে মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করেছি। কখনো ব্যক্তিগত অভিযোগ আসেনি। তবে কর্মজীবনের শেষ সময়ে এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্বকালে সংঘটিত হয়েছে। এ দায় আমি এড়াতে পারি না। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশেই এই হত্যাযজ্ঞ হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রত্যেক নিহত ও আহত পরিবারের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার বর্ণনার মাধ্যমে যদি সত্য প্রকাশ পায়, তাহলে আল্লাহ আমাকে হায়াত দিলে অন্তত কিছুটা অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।”
আবেগঘন কণ্ঠে মামুন স্বীকার করেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে সরকারের নির্দেশে পুলিশ অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। “পুলিশপ্রধান হিসেবে আমি লজ্জিত, অনুতপ্ত এবং এজন্য ক্ষমাপ্রার্থী,”—যোগ করেন তিনি।
তার ভাষায়, “অপরাধবোধ ও বিবেকের তাড়নায়ই আমি রাজসাক্ষী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিমসহ অন্যান্যরা।
১১তম দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আগামীকাল (৩ সেপ্টেম্বর) জেরা করার দিন ধার্য করেছে। বেলা পৌনে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :