ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী শান্তার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির তদন্ত শুরু

কালের সমাজ | বিনোদন ডেস্ক আগস্ট ৩, ২০২৫, ০১:৫২ পিএম কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী শান্তার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির তদন্ত শুরু

কলকাতায় ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি ও অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি মডেল ও অভিনেত্রী শান্তা পলের বিরুদ্ধে এবার গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। তাঁর কার্যকলাপে ‘সন্দেহজনক’ উপাদান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ জানায়, শান্তা পল বৈধ ভিসায় ভারতে প্রবেশ করলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশে ফেরেননি। বরং সেখানে থেকেই ভুয়া আধার কার্ড ও ভোটার আইডি তৈরি করে কলকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। এসব নথির মাধ্যমে দীর্ঘদিন তিনি মডেলিং ও অভিনয়ের কাজ করেন। সোমবার দক্ষিণ কলকাতার গল্ফ গ্রিন এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর শান্তার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক বাংলাদেশি নথিপত্র। এছাড়া তার ভারতীয় পরিচয়পত্রগুলো জাল বলে নিশ্চিত হয়েছে তদন্তকারীরা।

শান্তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ঘেঁটে পুলিশ জানতে পেরেছে, তিনি ভারত-নেপাল-চীন সীমান্ত এলাকার একটি ভ্রমণে গিয়ে সেখানে ভিডিও ধারণ করেছিলেন, যেটি অনলাইনে পোস্ট করেন। এই বিষয়টি গোয়েন্দাদের সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তোলে।

কলকাতা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “একজন ট্রাভেল ভ্লগার হিসেবে শান্তা পল নাথুলা পাসে গিয়েছিলেন এবং সীমান্ত এলাকার ছবি-ভিডিও সংগ্রহ করেছেন। এটি নিছক ভ্রমণ নাকি গোপন কোনো উদ্দেশ্য ছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

পুলিশ বলছে, শান্তার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ভারতের হরিয়ানাভিত্তিক ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রার কৌশলের মিল রয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের মে মাসে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মালহোত্রাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয় এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর কাছে তথ্য পাচারের অভিযোগ ওঠে।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে, শান্তা কলকাতায় একটি হোটেল ব্যবসার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে দাবি করেন, ভারতের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ওই ব্যবসা শুরু করেন। পুলিশ বিষয়টি যাচাই করছে।

শান্তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও খোঁজ নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জানা গেছে, তিনি দক্ষিণ কলকাতার উপকণ্ঠে একটি সম্পত্তি কিনেছেন, যা তার লিভ-ইন পার্টনারের নামে। ওই ব্যক্তি অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা এবং পেশায় মার্চেন্ট নেভির কর্মকর্তা।

পুলিশ আরও জানতে চায়, দীর্ঘদিন ভারতীয় গ্ল্যামার জগতে কাজ করার সুবাদে শান্তা কি কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কিনা, যার ফলে এতদিন সন্দেহ ছাড়াই ভারতে অবস্থান করতে পেরেছেন।

গোটা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে শান্তাকে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, শান্তা পলের কর্মকাণ্ডে গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সূত্র: এনডিটিভি

কালের সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!