কিশোরগঞ্জে নরসুন্দা নদীর ওপর সেতুর নামে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী ও পরিবেশবিদরা বলছেন, এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ৬৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ। পরিকল্পনাবিহীনভাবে নদীর গতিপথ বন্ধ করে এমন সেতু নির্মাণে হতবাক স্থানীয়রা।
নরসুন্দা নদীর ওপর সদর উপজেলার রঘুখালী এলাকায় ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় গত বছরের ৭ অক্টোবর। শহর বাইপাস সড়কের এ সেতুর মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কাজের ৪০ শতাংশ সম্পন্ন হওয়ার পর দৃশ্যমান হয় ভিন্ন বাস্তবতা। এলাকাবাসীর মতে, এটি সেতু নয় বরং নদীর গতিপথ বন্ধ করে পাকা বাঁধ তৈরি হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এভাবে সেতু নির্মাণ হলে বর্ষায় নদীর পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। বন্যার ঝুঁকি বাড়বে।
রিভার বাংলার সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ঠিক কী কারণে নরসুন্দা নদীতে এত নিচু ব্রিজ করা হচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এটি নির্মাণের পর বর্ষাকালে কোনো নৌযান এর নিচ দিয়ে চলাচল করতে পারবে বলে মনে হয় না। শুধু এটিই নয়, এর আগেও নরসুন্দা নদীতে একাধিক নিচু ব্রিজ করা হয়েছে। আমরা সেগুলো নতুন করে নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘নরসুন্দা নদী খনন ও সৌন্দর্যবর্ধনে ১৩ শত কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর আগেই এলজিইডি নদীর ওপর বাঁধ তৈরি করে নদীকে হত্যা করছে। আমরা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনে যাব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবীর দায় এড়িয়ে বলেন, ওই মুহূর্তে আমি কর্মরত ছিলাম না। ডিজাইন সদর দপ্তর থেকে অনুমোদিত হয়েছে। এখান থেকে সার্ভে করে পাঠানো রিপোর্টের ভিত্তিতেই কাজ হয়েছে।
দুই কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ সেতুর কাজ ১১ মাসেও মাত্র ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাকি ৬০ শতাংশ কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে। তবে এলাকাবাসীর দাবি, সেতুর নিচ দিয়ে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ও নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :