চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে ক্লাস যথারীতি চলবে। শনিবার (৩০ আগস্ট) রাতের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের ব্যাপক সংঘর্ষের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়।
রোববার (৩১ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন স্বাভাবিক সূচি অনুযায়ী চলবে।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২ নম্বর গেটের কাছে শাহাবুদ্দীন ভবনে দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে দারোয়ান মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। ছাত্রীটি জানান, নির্ধারিত সময়ের আগেই বাসায় ফিরলেও গেট খোলা হয়নি। পরে রুমমেটদের সহায়তায় ভেতরে ঢুকতে গেলে দারোয়ান তার ওপর চড়াও হন ও হাত তোলেন।
এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হয়ে গেট এলাকায় জড়ো হন। একপর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসজুড়ে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে রূপ নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদের মাইক থেকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক ঘোষণা দেওয়ার পর স্থানীয়রা দলে দলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। নিরাপত্তাকর্মীরা ঘটনাস্থলে থাকলেও তেমন কোনো সহায়তা দেননি বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, “কিছু লোকের কারণে আজ আমরা রক্তাক্ত হলাম। আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি।”
আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান অভিযোগ করেন, স্থানীয়রা অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, রাত দেড়টার পর থেকে আহত শিক্ষার্থীদের মেডিকেলে আনা শুরু হয়। সীমিত লোকবল ও সরঞ্জামের কারণে প্রায় ৬০ জনকে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। অক্সিজেন সংকট থাকায় অনেককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। গুরুতর আহতদের মধ্যে কয়েকজনের মাথা ফেটে গেছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই বারবার স্থানীয়দের হাতে তারা হামলার শিকার হচ্ছেন। এবারের ঘটনায়ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :