ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২

একই দিনে জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন ইউনূস, মোদি ও শেহবাজ

কালের সমাজ | আন্তর্জাতিক আগস্ট ২৫, ২০২৫, ১২:১৮ পিএম একই দিনে জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন ইউনূস, মোদি ও শেহবাজ

আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুরু হতে যাচ্ছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশন। এর উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্কে একই দিনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। সোমবার (২৫ আগস্ট) পাকিস্তানি দৈনিক দ্য ডন-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের চার দিনব্যাপী উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়াকে প্রায় পারমাণবিক সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনার পর এবার প্রথমবারের মতো দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একই দিনে জাতিসংঘ মঞ্চে বক্তব্য দেবেন। অধিবেশনে তাদের ভাষণ দেওয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ সেপ্টেম্বর। ওই দিনই ড. মুহাম্মদ ইউনূসও বক্তব্য রাখবেন।

জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের প্রকাশিত প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, সেদিন সকালে বক্তব্য রাখবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার পরপরই বক্তব্য দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। এতে ইসলামাবাদের হাতে দিল্লির বক্তব্যের সরাসরি জবাব দেওয়ার কৌশলগত সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিকেলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বাংলাদেশ, চীন ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিরাও ভাষণ দেবেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশ নেবেন উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে। এ দলে থাকবেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার ও প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক ফাতেমি।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ৯ সেপ্টেম্বর। তবে উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক চলবে ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী প্রথম দিনে ব্রাজিল বক্তব্য রাখবে, এরপর যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন।

এবারের অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— “একসাথে ভালো: শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের পথে ৮০ বছর ও আরও বেশি।”

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মোদি ও শেহবাজের পরপর ভাষণ দুই দেশের অবস্থান স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলবে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারত সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো প্রাধান্য দেবে, আর পাকিস্তান কাশ্মির ইস্যুকে সামনে এনে আঞ্চলিক শান্তি নিয়ে বক্তব্য রাখবে। এক জ্যেষ্ঠ পাকিস্তানি কূটনীতিক বলেন, “বিশ্ব দেখেছে দক্ষিণ এশিয়া কত দ্রুত সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। কাশ্মির সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান ছাড়া জাতিসংঘের শান্তি ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হবে না।”

কূটনৈতিক মহলের মতে, এ বছরের অধিবেশন সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ব্যস্ত মৌসুমে পরিণত হবে। কারণ, গাজায় ইসরায়েলি অভিযান, ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের প্রতিক্রিয়া এখনও চলমান। এ প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ার উত্তেজনা ও কাশ্মির প্রশ্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে গুরুত্ব পেতে পারে।

প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ অধিবেশন এবং ২৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক অস্ত্র বিলুপ্তির আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে।

কালের সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!