অবরুদ্ধ গাজায় প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ ক্রমেই বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক বলেছেন, ইসরায়েল “একটির পর একটি যুদ্ধাপরাধ” করছে এবং গাজার বিপর্যয় এখন “বিশ্বের বিবেককে নাড়া দিচ্ছে।”
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা শহরের বাসিন্দাদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘এখনই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে।’ আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে গাজা শহরে। এছাড়া ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান আরও অভিযোগ করেছেন, বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো হচ্ছে এবং জীবনরক্ষাকারী সহায়তা সরবরাহ ইচ্ছাকৃতভাবে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। তাঁর মতে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) জবাবদিহি করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গত একদিনে অন্তত ৫০টির বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং ১০০টির বেশি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর আশ্রয়শিবিরসংলগ্ন আবাসিক ভবনগুলোকে টার্গেট করা হয়েছে বলে অভিযোগ সংস্থাটির। এছাড়া ২০০টিরও বেশি তাঁবু ধ্বংস হয়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিক হানি মাহমুদ আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, “একটির পর একটি সুউচ্চ ভবন ভেঙে পড়তে দেখা শুধু হৃদয়বিদারকই নয়, এগুলোর সঙ্গে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সেবাগুলোও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।”
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সোমবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ওসামা বালউশাও রয়েছেন। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় প্রায় ২৫০ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, যাদের সবাই ফিলিস্তিনি। বিদেশি সংবাদকর্মীদের গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। আধুনিক ইতিহাসে সাংবাদিকদের জন্য এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, উত্তর গাজায় একটি ট্যাংকের নিচে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে তাদের চার সেনা নিহত হয়েছে।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :