খাল দখলকারী ও ভূমিদস্যুদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, শুধু উচ্ছেদ নয়, তাদের জেলখানায় পাঠাতে হবে। আইন ভাঙার পরিণাম দেখাতে না পারলে দখলদার চক্র আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে।
মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা খাল পুনঃখনন কাজের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও উপস্থিত ছিলেন।
সাত কিলোমিটার দীর্ঘ শুভাঢ্যা খাল একসময় বুড়িগঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ত প্রাণবন্ত জলপথ ছিল। কৃষি, মৎস্যচাষ ও নৌপথে চলাচলের প্রধান ভরসা হলেও গত দুই দশকে দখল, ভরাট, অবৈধ স্থাপনা ও বর্জ্যের কারণে খালটি নর্দমায় পরিণত হয়।
পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান জানান, প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৩১৭ কোটিতে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, “জনগণের টাকার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। খরচ কমিয়েও কার্যকারিতা বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।”
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই পুনঃখনন প্রকল্পের কাজ করছে। খাল খননের পাশাপাশি পাড় বাঁধাই, ওয়াকওয়ে নির্মাণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।
স্থানীয়রা আশা করছেন, খাল পুনঃখননের ফলে বর্ষার পানি নিষ্কাশন, কৃষিজমিতে সেচ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিবেশের ভারসাম্য ফিরবে। তবে তারা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, উদ্ধারকাজ যেন রাজনৈতিক প্রভাব বা আপসের মাধ্যমে ব্যাহত না হয়। আগানগর এলাকার বাসিন্দা হাসিবুর রহমান বলেন, “এই খাল বাঁচানো মানে কেরানীগঞ্জকে বাঁচানো। আগের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, সেনাসদরের ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান, বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
কালের সসমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :